কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড খোদ পুলিশকর্মী। দেবব্রত কর্মকার নামে ওই ‘ডাকাত পুলিশ’কে গ্রেফতার করল লালবাজারের গোয়েন্দারা। সোমবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ওই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সিবিআই সেজে ডাকাতি করার অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনায় ধৃত দেবব্রত কর্মকার কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে কর্মরত। তিনি উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর রাতে ভবানীপুরের এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে সিবিআই সেজে ঢুকে ডাকাতি চালানো হয়। প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা নগদ ও গয়না হাতিয়ে নিয়ে চলে যায় বেশ কয়েকজন। তদন্তে নেমে জানা যায়, কোনও সিবিআই নয়, ব্যবসায়ীর এক প্রতিদ্বন্দ্বী এই কাজ করেছেন। ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে এমনটা ঘটেছে বলেই মনে করা হয়। আর সেই ডাকাতির মূল পান্ডা হিসেবে উঠে আসে রাকেশ মণ্ডলের নাম। রাকেশ সহ মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে পুলিশের স্টিকার দেওয়া গাড়িও।
ধৃত রাকেশকে জেরা করে ‘পুলিশ বউ’য়ের কথা উঠে আসে, যিনি একজন মহিলা কনস্টেবল। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ওই মহিলা কনস্টেবলের অ্যাকাউন্টে ডাকাতির টাকা জমা পড়েছিল বলে দাবি করা হয়। ওই মহিলা পুলিশকর্মী এবং রাকেশ সহ অন্য ধৃতদের জেরা করে উঠে আসে ‘দেবুদা’র নাম। আর সেই দেবুদাকে খুঁজতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে যে, ওই ‘দেবুদা’ আসেল স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশ কনস্টেবল দেবব্রত কর্মকার। দেবব্রতর সঙ্গে আসলে যোগাযোগ ছিল এক ব্যবসায়ীর, যিনি ভবানীপুরের অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী। তারপরই গত বছরের অক্টোবরে পুলিশকর্মী দেবব্রতর পরামর্শে রাকেশ নকল সিবিআই টিম তৈরি করে। দেবব্রতই বাকিদের পুলিশ সাজার জন্য আদবকায়দা শেখান বলে অভিযোগ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এবং প্রায় দেড় মাস নজরদারির পর অবশেষে গ্রেফতার করা হয় পুলিশকর্মী দেবব্রতকে।