‘কারণ আছে বলেই নোটিস’ বলছে বিজেপি, প্রতিহিংসার তত্ত্ব খাঁড়া করলেন সৌগত

রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় বলে নোটিসে জানিয়েছে সিবিআই। নোটিস দেওয়া হয়েছে অভিষেকের শ্যালিকাকেও। ঘটনাকে ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্ক।

'কারণ আছে বলেই নোটিস' বলছে বিজেপি, প্রতিহিংসার তত্ত্ব খাঁড়া করলেন সৌগত
অলঙ্করণ: অভিক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: Feb 21, 2021 | 5:46 PM

কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে (CBI on Coal Scam Case) তদন্তের ধার বাড়াল সিবিআই। এ বার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)  স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস দিল সিবিআই। রবিবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের একটি দল অভিষেকের কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছয়। রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় বলে নোটিসে জানিয়েছে সিবিআই। নোটিস দেওয়া হয়েছে অভিষেকের শ্যালিকাকেও। ঘটনাকে ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্ক।

শাসকদলের পক্ষ থেকে আগেই অভিযোগ করা হয়েছিল, ভোট আসলেই সিবিআইকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে বিজেপি। তার প্রেক্ষিতেই একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, “প্রকাশ্য জনসভায় দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেছিলেন, আমি টাকা নিয়েছি, প্রমাণ করতে পারলে গলায় দড়ি দেব। আজকে দেখা যাচ্ছে বউয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লেনদেন হয়েছে, শ্যালিকার অ্যাকাউন্ট থেকে হয়েছে। এবার দেখা যাবে তার অ্যাকাউন্ট থেকেও হয়েছে। বাংলার মানুষ অপেক্ষা করছিল, কবে সিবিআই সঠিক জায়গায় পৌঁছবে, আজ সেটা হল।”

কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, “বিনয় মিশ্র ওঁর খাস লোক। সিবিআই ওর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন খতিয়ে দেখেছে। আমার কাছেই ৬ মাস আগে খবর এসেছিল। সিবিআই-এর কাছে তো আরও খবর থাকবে।”

বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মাঝ রাতে গরু, কয়লা, সোনা পাচারের টাকা যে কলকাতায় আসত, সে তো সবাই জানে, দেশের লোক জানে। অভিযোগ তো বহুন লোক করেছে, আমিও করেছি। এখন তো দেখা যাচ্ছে অভিষেকবাবু যাদের দলের কমিটিতে জায়গা দিয়েছে, তারা সবাই তো অভিযুক্ত। এটা হওয়ারই ছিল। বাড়িগুলি হচ্ছে কীভাবে? কার পয়সায় হচ্ছে?”

শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘কে নারুলা, আমি তো আগেই বলেছিলাম। সত্যিটা সামনে আসবেই। শুধু কয়লা নয়, বালি চুরি, গরু চুরি, সোনা চুরি-সবই একই লোকের সঙ্গে যুক্ত।’

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা সৌগত রায় বলছেন, “নির্বাচনের আগে প্রতিশোধমূলক আচরণ। অভিষেকের স্ত্রীর নামে নোটিস দেওয়া হয়েছে। এখনও আমি নোটিসের কপিটা পাইনি। আরেকটু পরে পাব। তারপর আরও ডিটেইলে বলতে পারব। আমরা আইনগত যা ব্যবস্থা নেওয়ার, রাজনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়ার নেব। এ ভাবে ভয় দেখানো যাবে না।”

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে যখন গরু ও কয়লা পাচারের তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই, তখন থেকেই মাথাদেরকে খুঁজে বার করার চেষ্টা করছেন আধিকারিকরা। সেক্ষেত্রে আধিকারিকদের হাতে এসেছিল কলকাতার কোনও রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম। সিবিআই জানতে পারে, ওই ব্যক্তি মূল চক্রী অনুপ মাঝি ওরফে লালার থেকে ‘প্রোটেকশন মানি’ নিয়েছিলেন। অর্থাৎ নির্বিঘ্নে পাচার চালানোর জন্য় ওই ব্যক্তিকে লালা মোটা অঙ্কের টাকা দিতেন।

আরও পড়ুন: অভিষেকের কালীঘাটের বাড়িতে সিবিআই, নোটিস দেওয়া হল স্ত্রী রুজিরাকেও

লালা বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে তদন্তকারীরা ২৭-২৮টি ডায়েরি পেয়েছিলেন। সেখান থেকে জানা যায়, কোন কোন খাতে ও কাদের টাকা দিয়েছিলেন লালা। সেখানে দেখা যায়, রেল আধিকারিক থেকে শুরু করে স্থানীয় থানা, এসপিকে টাকা দিয়েছেন লালা। সেখানেই উঠে আসে বিনয় মিশ্রের নাম। বিনয় লালা ও ওই প্রভাবশালী ব্যক্তির লিঙ্কম্যান হিসাবে কাজ করতেন।বিনয়ের হাত ধরেই টাকা পৌঁছত প্রভাবশালীর বাড়িতে।