Koustav Bagchi Exclusive: সজলের মতো কৌস্তভও কি লাভবান হবেন? কুণালের ‘ভবিষ্যদ্বাণীর’ জবাব দিলেন খোদ কংগ্রেস নেতা
Koustav Bagchi Exclusive: TV9 বাংলার সাক্ষাৎকারে প্রশ্নটা রাখা হয়েছিল কৌস্তভের কাছে। তিনি কী উত্তর দিলেন শুনুন...
কলকাতা: ‘….পুলিশ গিয়ে গ্রেফতার ঠিক হল না। আমি কৌস্তুভের গ্রেফতারের বিরোধিতা করছি।’ শনিবার কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর (Koustav Bagchi) গ্রেফতারি নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, তখন ঠিক বেলা একটা নাগাদ একটা টুইস্ট। কংগ্রেস নেতার গ্রেফতারি নিয়ে সরব বাংলার শাসকদলেরই মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এই গ্রেফতারি নাকি কৌস্তভকেই লাভবান করবে। যেমনটা নাকি হয়েছিল বিজেপি নেতা সজল ঘোষের ক্ষেত্রেও! নিজের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার জাহির করলেন কুণাল। সজল ঘোষ, যাঁকে কিনা, লাথি মেরে দরজা ভেঙে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আর তার পরবর্তী পর্যায়ে ওই বছর ডিসেম্বর মাসে কলকাতার পুরভোটে ৫০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জেতেন সজল। তাহলে কি এই গ্রেফতারি কৌস্তভকেও রাজনৈতিক দিক থেকে লাভবান করবে, তিনি তো স্বাভাবিকভাবেই আজকের বহুচর্চিত নাম। TV9 বাংলার সাক্ষাৎকারে প্রশ্নটা রাখা হয়েছিল কৌস্তভের কাছে। তিনি কী উত্তর দিলেন শুনুন… কৌস্তভের কথায়, “এটা দলের মধ্যেই একটা স্ক্রিপ্টেড স্টোরি। দলের মধ্যেই প্রচুর বিরোধ হয়েছে এই অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে। এটা ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। কুণাল ঘোষের পোস্ট নিয়ে আমি আর কী বলব? কুণাল ঘোষকে বাংলার মানুষ ভাল চেনে, আমি সেটা নিয়ে কিছু বলব না।” তাঁর আরও সংযোজন, ” বাংলার স্থাবকতার রাজনীতি চলছে। সাধারণ মানুষ কথা বলতে চায়,স্থাবকদের জন্য সেটা দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে।”
শনিবার কৌস্তুভকে গ্রেফতার করেছে উত্তর কলকাতার বড়তলা থানার পুলিশ। মধ্যরাতে তাঁর বাড়িতে পুলিশি হানা, টানা দু’ঘণ্টা ঠাঁই বাড়িতে বসে থাকে, সকালে গ্রেফতারি, আর তারও ৮ ঘণ্টা বাদে জামিন-কৌস্তভ আজ বাংলার সংবাদ শিরোনামে। কংগ্রেস, বামফ্রন্ট, আইএসএফ, বিজেপি ছাড়া বিদ্বজ্জনেরও এই গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন খোদ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
শনিবার যখন দিনভর তপ্ত বাংলা, কুণাল তখন হাসপাতালে। তাঁর পায়ে একটি অপারেশন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতাল থেকেই নজর রেখেছিলেন গোটা বিষয়ের ওপর। বেলা ১ টা নাগাদ তাঁর তিনি একটি টুইট করেন। তিনি লেখেন, ‘‘আমাদের ছাত্রযুবরা কৌস্তভের অসভ্যতা বুঝে নিতে পারত। কিন্তু পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার ঠিক হল না।’’ কুণালের মত, গ্রেফতারি কৌস্তভকেই লাভবান করবে। তাঁর কথায়, “বিরোধী শক্তির অশুভ আঁতাঁতের কুৎসিত রাজনীতির হাতিয়ার হবে, একাংশের মিডিয়ার পক্ষপাতদুষ্ট প্রচারের মুখ হবে, কিছু মানুষের সহানুভূতি পাবে। গ্রেফতারকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করবে তারা।” এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি সজল ঘোষের গ্রেফতারি প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। তিনি লেছেন, “যে দিন পুলিশ সজলের বাড়ির দরজা ভেঙেছিল, আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। পরে প্রমাণিত হয়েছে আমার প্রতিবাদ সঠিক ছিল। লাভ হয়েছিল সজলের। মধ্য কলকাতায় একটি ওয়ার্ড জিতেছিল বিজেপি। সে দিন পুলিশি অভিযানের ধরন ছিল ভুল।” প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৩ অগস্ট মুচিপাড়া থানার পুলিশ বিজেপি নেতা সজল ঘোষকে গ্রেফতার করে। তাঁর গ্রেফতারি নিয়েও হয়েছিল চরম নাটকীয়তা। ঘরের মধ্যে ছিলেন সজল। বারবার ডাকা সত্ত্বেও তিনি বেরোননি। এরপর দরজায় লাথি মেরে ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। কাকতালীয়ভাবে ওই বছরই চার মাস বাদে কলকাতার পুরভোটে ৫০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জেতেন সজল।
কৌস্তভের গ্রেফতারির ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে সেই নাটকীয়তাই। কৌস্তভের কথায়, মধ্যরাতে কোনও কাগজ ছাড়াই গ্রেফতার করতে ঢুকেছিল পুলিশ। ভোর পাঁচটা পর্যন্ত কৌস্তভের ঘরেই বসে থাকেন পুলিশ কর্তারা। ওই সময়ের মধ্যেই নাকি কাগজপত্র তৈরি হয়। কৌস্তভের এই গ্রেফতারি জনমানসে প্রভাব ফেলবে আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে শাসকদলই, সেটাই অনুমান শাসকদলের মুখপাত্রের।