কলকাতা: জল্পনা ছিল অনেক দিন ধরেই। বেশ কিছুদিন ধরে বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর (Debasree Chaudhuri) সঙ্গে তাঁর বিরোধ প্রকট হয়ে উঠেছিল। অবশেষে তৃণমূলে (TMC) ফিরলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক (Raygunj MLA) কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani)। আজ বুধবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে তিনি তুলে নিলেন দলীয় পতাকা। তাঁর দাবি, ‘বিজেপিতে কাজের পরিবেশ নেই, শুধুই ষড়যন্ত্র চলছে। তাই এই দলবদল।’ বিধায়কের কথায়, ‘মমতা যা বলেছেন সেই কথা রেখেছেন।’
এ দিন এক দিকে দেবশ্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। পাশাপাশি, তৃণমূলে যোগদানের পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘এক বছরের সনাতন’ বলে কটাক্ষ করেন কৃষ্ণ কল্যাণী। বিধায়ক বলেন, ‘উনি নিজেকে বলেন যে উনি সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী। এক বছর আগে বলতেন বিজেপি হটাও, দেশ বাঁচাও। এখন বলছেন তৃণমূল হটাও। তার মানে উনি এক বছরের সনাতন। আর আমি ৪৪ বছরের সনাতন। আমাকে কী ওনার কাছ থেকে সনাতন ধর্ম শিখতে হবে?’
এ দিন বিধায়ক আরও বলেন, ‘বিজেপিতে থেকে কাজ করা যাচ্ছিল না। তাঁর দাবি, বিজেপিতে ভালো কাজের কোনও মূল্য নেই, ভালো কাজের পরিবেশ নেই। আছে শুধুই ষড়যন্ত্র। আর ষড়যন্ত্র দিয়ে রাজনৈতিক লড়াই জেতা যায় না। তার জন্য উন্নয়ন দরকার। মানুষকে পরিষেবা দেওয়া দরকার। আর সেটাই দিচ্ছে মা-মাটি-মানুষের সরকার।’
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘উনি বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হলেও মনে প্রাণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে বিশ্বাসী, তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নে বিশ্বাসী তাই তৃণমূলে ফিরলেন কৃষ্ণ কল্যাণী।’
বিগত এক মাস ধরেই কৃষ্ণ কল্যাণীর দলবদল নিয়ে জল্পনা ছিল। কিছুদিন আগে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের সঙ্গে রায়গঞ্জের দলীয় বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর কোন্দল প্রকাশ্যে আসে। রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, জেলা কমিটির কোনও দলীয় কর্মসূচিতে আর তিনি থাকবেন না। বাসুদেব সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।একই সঙ্গে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধেও সরব হতে দেখা যায় তাঁকে।
এ দিন কৃষ্ণ কল্যাণী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘এরা হল রাজনৈতিক ব্যবসায়ী। নীতি আদর্শের জন্য বিজেপিতে আসেননি, নীতি আদর্শের জন্য তৃণমূলেও যাচ্ছে না। এদের নিয়ে কোনও দলই রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে না।’ বিজেপি নেতার কথায়, ‘জোয়ার-ভাটার খেলায় এরা এসেছিলেন, যাওয়ার কথাই ছিল। এরা ক্ষমতার অলিন্দে থাকতে ভালোবাসেন।’ কৃষ্ণ কল্যাণীর অভিযোগকে গুরুত্ব দিতেও নারাজ বিজেপি।
এ দিকে, রায়গঞ্জের বিধায়ক দলে যোগ দেওয়ায় এবারে জেলার মোট ৯টি বিধানসভাই তৃনমুলের দখলে গেল। আগামী নির্বাচনগুলিতে তৃণমূল আরও ভালো ফল করবে বলে দাবি জেলা তৃনমুল নেতৃত্বের। কৃষ্ণ কল্যাণী তৃণমূলে ফেরায় রাজ্যে বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা হল ৭০।
আরও পড়ুন: Sukanta Majumder: ‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সবার জোটেনি, হাসপাতালে চিকিত্সা পাবেন কি না সন্দেহ!’