কলকাতা : সুদীপ্ত সেনের মন্তব্য ঘিরে ফের একবার তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে বোমা ফাটিয়েছেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। অভিযোগ করেছেন, শুভেন্দু নাকি ব্ল্যাকমেল করত। একাধিক বার শুভেন্দু অধিকারী টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ওঠা এমন অভিযোগের লোপ্পা বলে ছক্কা হাঁকানোর সুযোগ ছাড়েনি তৃণমূল শিবির। শুক্রবার বিকেলে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল ঘোষ এবং তাপস রায়। নিশানায় শুভেন্দু অধিকারী। রীতিমতো স্ক্রিন লাগিয়ে সুদীপ্ত সেনের বক্তব্যের ভিডিয়ো দেখাল তৃণমূল শিবির, যেখানে তিনি শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিচ্ছেন।
কুণাল ঘোষ বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীর নাম তখন থেকেই সামনে ছিল। যাঁরা সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং যাঁরা সাধারণ মানুষ, তাঁরা সকলেই জানেন। এর আগে যখন সুদীপ্ত সেন চিঠি দিয়েছিলেন, তখনও পরিষ্কারভাবে লেখা ছিল, কার মাধ্যমে যোগাযোগ, কীভাবে যোগাযোগ, কাকে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে।”
এরপর আক্রমণের সুর আরও চড়ান কুণাল ঘোষ। বলেন, “সুদীপ্ত সেন আগের চিঠিতে এও লিখেছিলেন, যখন তিনি রহস্যজনক শহর থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন, তার আগে শুভেন্দু গিয়েছিলেন, দেখা করেছিলেন তাঁর সঙ্গে। শুভেন্দু জানেন বলেই বিজেপিতে গিয়েছেন। শুভেন্দু সিবিআই, ইডি থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “সারদা একটি বড় কেলেঙ্কারি। বহু মানুষ অসুবিধায়। বহু মানুষের সঙ্কট। কিন্তু সেটিকে ঘুরিয়ে দিয়ে কয়েকজনের কাঁধে বন্দুক রেখে, কুৎসার অভিমুখ ঘুরে, যদি শুভেন্দু অধিকারী বিজেপির কোলে বসে দোল খান… একটি ব্ল্যাকমেলার…”
শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকে শুরু থেকেই কুণাল ঘোষের নিশানায় ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, “সারদা কর্তা তাঁর লিখিত স্টেটমেন্টে বলছেন, ক্যাশে টাকা দিয়েছেন। বার বার বলছেন, একটি বাড়ি দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা ড্রাফটে নেওয়া হয়েছে। ড্রাফটে মানে তো সেটার প্রমাণ রয়েছে। তার সঙ্গে এতগুলি টাকার ক্যাশ। বলছেন, সেবি সামলে দেব বলে টাকা নেওয়া হয়েছে। কেন শুভেন্দু অধিকারী গ্রেফতার হবেন না? তিনি আজ বিজেপির দরজায় বাধা কুকুরের মত ঘেউ ঘেউ করছেন শুধুমাত্র নিজেকে বাঁচাতে। শুভেন্দু সবথেকে ভাল জানেন, এই অভিযোগগুলি ঠিক।”
আক্রমণের সুর চড়িয়ে কুণাল বলেন, “নারদায় কী হয়েছিল? বিজেপি অফিসে বসে এইভাবে স্ক্রিন দিয়ে নারদার ফুটেজ দিয়ে বিজেপি নেতারা দাবি করেছিলেন গ্রেফতার করতে হবে। সিবিআই এফআইআর দায়ের করেছিল। এবার ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে হারার পর বিজেপি সিবিআইকে ভোরবেলা তৃণমূল নেতাদের বাড়ি পাঠায়। শুভেন্দুর বাড়িতে পাঠায় না কেন? আজ আমরাও এখানে স্ক্রিন দেখিয়ে বলছি, যদি নারদায় এই স্ক্রিন দেখিয়ে বলার পর সিবিআই এফআইআর করে থাকে, তাহলে এই স্ক্রিন দেখিয়ে যেখানে বহুদিন ধরে মূল অভিযুক্ত বলে যাচ্ছেন টাকা দিয়েছেন শুভেন্দুকে। সিবিআই যাক কাঁথিতে, দেখুক। শুভেন্দু প্রভাবশালী, বিজেপিতে আছেন, তাঁকে কাস্টডিতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।”