কলকাতা ও ইটাহার: ইটাহারের বিজেপি যুব মোর্চার সব সভাপতি মিঠুন ঘোষের খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর। বিজেপির অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক টুইটে অভিযোগ তুলেছেন, খুনে জড়িত তৃণমূল কংগ্রেস। সময়ের মোড় ঘুরলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছেন শুভেন্দু। মিঠুন ঘোষকে বিজেপি ভুলবে না, টুইটে এও জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
তবে শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগকে একেবারেই আমল দিতে চাইছেন না তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ” তৃণমূল কেন তাঁকে (বিজেপি যুব মোর্চার সহ সভাপতি মিঠুন ঘোষ) হত্যা করবে? আমরা জানি না, সেখানে সঠিক কী হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত করছে।” শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য যে একেবারেই ভিত্তিহীন তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে আড়াল করতেই তৃণমূলের উপর খুনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
রবিবার বাড়ির সামনেই ওই বিজেপি যুব নেতাকে গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় ওই নেতাকে। তাঁর পেটে একাধিক গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ইটাহারে বিজেপি যুব মোর্চার নেতা খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে এক অভিযুক্তকে। এখনও অধরা অন্য এক অভিযুক্ত। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে দুজনের নাম উঠে আসছে তাঁরা নিহত বিজেপি নেতা মিঠুন ঘোষের পূর্ব পরিচিত। তাঁরা তিন বন্ধুও ছিলেন। আবার আরও একটি বিষয় উঠে আসছে। নিহত মিঠুন ঘোষে বিজেপি করলেও বাকি দুজন তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
যদিও তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেছেন, “বিজেপি যাই অভিযোগ করুক। ওটা সত্য নয়। ওরা তিন জনে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে বন্দুক নিয়ে অ্যাডভেঞ্চার করছিল। তাতেই গুলি ছিটকে মৃত্যু।” তাঁর আরও দাবি, বিজেপি আসলে বুঝে গিয়েছে আসল কারণ কী, তাই এসব বলছে।
মিঠুন ঘোষ নামে বছর বত্রিশের ওই বিজেপি যুব নেতার বাড়ি ইটাহারের রাজগ্রামে। ঘটনার খবর পেয়েই হাসপাতালে পৌঁছন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ সরকার। প্রদীপ সরকার বলেন, “আমাদের যুব মোর্চার জেলার সহ সভাপতি মিঠুন ঘোষ। ইটাহার বিধানসভার রাজগ্রামে তার বাড়ি। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ বাড়িতে ঢুকে মোটর বাইকটা রেখে বেরোয়। তখন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী কাশেম আলি ওর উপর বন্দুক নিয়ে হামলা চালায়। ওর পেটে গুলি করে। মিঠুন আমাদের মধ্যে আর নেই।”
আরও পড়ুন : Biman Basu: সিপিএমে ‘অনুপ্রবেশ’ হচ্ছে, শত্রু ‘চর’ পাঠাচ্ছে! একের পর এক বিস্ফোরক দাবি বিমান বসুর