কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা হয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার জন। কিন্তু চাকরিহারাদের জন্য বড় বার্তা তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের। তিনি আশ্বস্ত করে বললেন, “হয়রানি হয়েছে ঠিকই৷ তবে ইতিমধ্যেই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে।” তবে এসবের পিছনে রাম-বাম রাজনীতিকেই দাঁড় করিয়েছেন তিনি। সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। বাংলার পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে তিনি তুলে এনেছেন ত্রিপুরায় একটা শিক্ষায় দুর্নীতির প্রসঙ্গ।
কুণালের খোঁচা, “বিজেপি-সিপিএমের কথা বলার অধিকার নেই৷ ত্রিপুরা রাজ্যে সিপিএম জমানায় এই ধরণের অনিয়মের জন্য সিপিএম জমানায় চাকরি গিয়েছিল। বিজেপি বিকল্প ব্যবস্থা করবে বলেছিল, তারা করেনি৷ এরা সাধু সেজে এখন কেন কথা বলছে?” সরাসরি আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে অতীত স্মরণ করিয়ে বলেন, “বিকাশবাবু এখন বলুন ত্রিপুরায় ১০ হাজার ৩২৩ জনের যখন চাকরি যায়, তখন সিপিএমের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বলেছিলেন কয়েক জনের ভুলের জন্য সবার চাকরি যেতে পারে না। কিন্তু এখানে কেন হল? আসলে এরা এখন দ্বি-চারিতা করছে। এখানে সাধু সাজতে যাচ্ছে এটা হতে পারে না।”
উল্লেখ্য, এই রায়ের পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন। মমতা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেই বলেন, “আমি অবাক হয়ে যাই, এখানে কেসটা করেছিলেন কে? বিকাশবাবু। তিনি তো পৃথিবীর সবথেকে বৃহত্তম আইনজীবী। তিনি কেন এখনও নোবেল প্রাইজ় পাচ্ছেন না জানি না। পাওয়া উচিত। ভাবছি একটা রেকমেনডেশন করব।”
যদিও এই খোঁচা নিয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আগেই বলেছিলেন, “আমাকে দায়ী করতেই পারে। কারণ তারা লক্ষ্যভ্রষ্ট। যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের কথা না ভেবে, বোকার মতো ভাবছে আমি তাদের শত্রু। লোকে বিপদে পড়লে যেমন ভগবানের শরণ নেয়, তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিপদে পড়লে বিকাশ ভট্টাচার্য এবং সিপিএমের শরণ নেয়।”
কেবল সিপিএম না, বিজেপিকেও কটাক্ষ করেন কুণাল। তিনি বলেন, “একতরফা রায় দিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু বানাতে বাম-রামদের সাহায্য করা হচ্ছে৷ বিজেপি-সিপিএমের কথা বলার অধিকার নেই৷ একটা জিনিসকে তছনছ করেছে৷ এরা সবাই যন্ত্রী! ওদের জ্ঞান দেওয়ার দরকার নেই৷”
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের পরই নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে শাসকশিবিরকে তিরবিদ্ধ করছেন বিরোধীরা। এই দুর্নীতির শিকড় যে অত্যন্ত গভীরে, আর তার বলি যে হতে হল শিক্ষকদের, সে বিষয়ে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সুপ্রিম রায়ের ২৪ ঘণ্টা পর মুখ খুললেন কুণাল। রাম-বামকে খোঁচা দিয়ে কুণাল বলেন, ” বাজার গরম করা, সস্তার বিষয় নিয়ে ভিত্তিহীন কথা বলে চলেছেন। যারা চাকরি খাওয়ার রাজনীতি করেছে। যারা প্রভাব খাটিয়ে পথে বসাতে চেয়েছে তাদের এখন আবার নাটক করে কী লাভ হল?”
সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়েও কুণালের মত, “এটা সুস্থ স্বাভাবিক ন্যায়বিচার বলে মনে করছি না। সিপিএম রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে নেমেছে। তবে কেউ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বা প্রাক্তন আধিকারিক হতে পারেন৷ কাউকে ডিফেন্ড করা হবে না। যোগ্যদের কী করে চাকরি যেতে পারে?”