Kunal Ghosh: ‘মধ্যরাতে তিনিই আমার শায়িত দেহে অস্বাভাবিকতা দেখেন’, জীবনের বিশেষ ‘বাঁকে’র বললেন কুণাল
Kunal Ghosh: ২০১৪ কাট টু ২০২৫! কুণালের জীবনের সে অধ্যায় এখন অতীত। সাংবাদিকতা থেকে রাজনৈতিক জীবন, সেখান থেকে সারদা কেলেঙ্কারিতে যোগ, জেলে থাকাকালীন শাসক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, জেলমুক্তির পর আবারও ধীরে ধীরে সক্রিয় রাজনীতিতে পদাপর্ণ, আবারও শাসকদলেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে-ভূমিকায়!

সালটা ২০১৩, সে সময়ে বাংলা তপ্ত সারদা কেলেঙ্কারিতে। কোটি কোটি টাকার আর্থিক নয়ছয়। নিজের সর্বস্ব আমানত খুইয়ে প্রায় রোজই আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন বহু মানুষ। ২০১৩ সালের সেই সারদা কেলেঙ্কারি নাড়িয়ে দিয়েছিল বঙ্গের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে। ২৩ এপ্রিল সারদা কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় কুণাল সারদা পরিচালিত সংবাদ সংস্থায় চাকরি করতেন। একই সঙ্গে সে সময় তিনি ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদও। ওই বছরেরই ২৩ নভেম্বর বিধাননগরের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা তাঁকে গ্রেফতার করে।
তারপর থেকে সংশোধনাগারে। জেলে থাকাকালীন পরের বছর নভেম্বরে প্রেসিডেন্সির সেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কুণাল। একুশ নম্বর সেলে মধ্যরাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সারদা-অধ্যায়ে সে সময়ে এই ঘটনা নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেয়।
২০১৪ কাট টু ২০২৫! কুণালের জীবনের সে অধ্যায় এখন অতীত। সাংবাদিকতা থেকে রাজনৈতিক জীবন, সেখান থেকে সারদা কেলেঙ্কারিতে যোগ, জেলে থাকাকালীন শাসক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, জেলমুক্তির পর আবারও ধীরে ধীরে সক্রিয় রাজনীতিতে পদাপর্ণ, আবারও শাসকদলেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে-ভূমিকায়! গোটা বাংলাকে বুঝিয়েছেন, বিতর্ক-দায় মাথায় নিয়ে একেবারে অপ্রাসঙ্গিক পর্ব থেকে ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠা, কীভাবে সম্ভব! আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সেই রাতের কথা তিনি যখন মনে করছিলেন, তখনও দুই ব্যক্তির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করলেন তিনি।
অসীম আচার্য্য, জেলের এক অফিসার। কুণালের দাবি, সুস্থ হওয়ার পর তিনি শুনেছিলেন, জেলের এই অফিসারই তাঁকে প্রথম অস্বাভাবিক অবস্থায় দেখেছিলেন। সংশোধনাগারের তালা খুলিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। দুই, এমপি এমএলএ কোর্টের বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য। কুণাল লেখেন, “য় দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণের পর রায়দানে আত্মহত্যার চেষ্টা প্রমাণিত বলে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করেন। কিন্তু নজিরবিহীনভাবে জানান কোনো শাস্তি দেওয়া হবে না। কারণ আত্মহত্যার চেষ্টার সময়ে যে মানসিক অবস্থা ছিল, তাতে শাস্তি হয় না।” সেসময়ে বিচারক কীভাবে তাঁর মনোবল বাড়িয়েছিলেন, সেটাও নিজের সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন তিনি। কুণাল লেখেন, ” বিচারক আমাকে বলেছিলেন,’ আপনার লেখা, সাংবাদিকতা খুব ভালো। আরও কত কাজ করেন। আরও অনেক কাজ করার আছে আপনার। কখনও কোনো অবস্থায় নিজেকে শেষ করতে যাবেন না।” এখনও বিচারকের সেই কথা তাঁর কানে বাজে বলে, সে কথাও বললেন কুণাল। সঙ্গে এও লিখলেন, জীবনে তাঁর এখনও অনেক কিছু করার বাকি! বোঝালেন এইভাবেও ফিরে আসা যায়…
