কলকাতা: আত্মহত্যার মামলায় দোষী সাব্যস্ত তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক, মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এমএলএ এমপি আদালতের বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য বলেন, “আত্মহত্যার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু শাস্তি দেব না।” কুণাল ঘোষের উদ্দেশে বিচারকের পর্যবেক্ষণ, ” শুধু ওঁকে বলব এই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না। আপনি যে লড়াই করছেন করুন। যত অবসাদই হোক, আত্মহত্যা সমস্যার সমাধান হয় না।” এই মামলায় রায় দানের পর বিচারক আরও বলেন, “আপনি বিশিষ্ট সাংবাদিক। প্রতিষ্ঠিত পরিবারের সন্তান। আপনার কাছ থেকে সমাজ অনেক কিছু আশা করে। আপনি মামলা আইনে লড়ুন এবং কাজ চালিয়ে যান।”
২০১৩ সালে একটি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার আর্থিক নয়ছয়ের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল কুণাল ঘোষকে। তাঁকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল। ২০১৪ সালে ১৩ নভেম্বরে আচমকাই জেলের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কুণাল ঘোষ। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, কুণাল ঘোষ একসঙ্গে অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। কুণাল ঘোষকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সল্টলেকের এমএলএ-এমপি আদালতে কুণাল ঘোষের আত্মহত্যার চেষ্টার মামলা দীর্ঘদিন ধরেই চলে।
এই মামলায় জেলের রক্ষী থেকে কয়েদি অনেকের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অনেক পুলিশকর্তাদেরও সাক্ষ্য নেওয়া হয়। জেল সূত্রে জানা যায়, কুণাল ঘোষ নিয়মিত অনেক ওষুধ খেতেন। তবে আদালত সূত্রে খবর, কুণাল ঘোষ অসুস্থ হওয়ার আগের রাতেও একটি মাত্র ওষুধ খেয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন তাঁর ওপর নজরে থাকা জেলের অফিসারেরা। জেল কর্মীদের সামনেই তাঁকে ওষুধ দেওয়া হত, তাই একসঙ্গে ওত ওষুধ খাওয়া সম্ভব নয়।
যদিও কুণাল ঘোষের শারীরিক পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তাঁর পেটের ভিতর অনেকগুলি ঘুমের ওষুধ ছিল।
এদিনের রায় প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, “বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের শিকার আমি। সেদিন যাঁরা বলেছিলেন আমি পাগল ,নাটক করছি। এখন প্রমাণিত হয়েছে। রাজ্য সরকারের পুলিশ প্রমাণ করে দিল যে আমি সেদিন কোনও নাটক করিনি। তা আজ প্রমাণিত। বিচারক আমাকে আজ একটু তিরস্কারই করেছেন বলা যায়।”
কুণাল ঘোষের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী বলেন, “৩০৯ ধারায় যে মামলাটি চলছিল, তাতে কুণাল ঘোষ দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। কিন্তু আদালত তাঁকে কোনও শাস্তি দেয়নি। অর্থাৎ তাঁর কোনও জরিমানা বা জেল হয়নি। আদালত বলছে, সমাজ ওঁর কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করে।”