কলকাতা: ১০০০ দিন অর্থাৎ প্রায় তিন বছর ধরে রাস্তায় বসে যাঁরা আন্দোলন করছেন, আজ সোমবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই বৈঠকে থাকবেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। নিয়োগের ক্ষেত্রে যখন শাসক দলের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তখন সেই শাসক দলের নেতা কেন থাকছেন বৈঠকে? কুণালের দাবি, তিনি নাকি আন্দোলনকারী চাকরি প্রার্থীদের প্রতিনিধি। তবে, বিরোধীরা বলছেন, আদতে চাকরি প্রার্থীদের মঞ্চে বিভাজন ঘটাতেই যাচ্ছেন কুণাল।
গত শনিবার এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীরা আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ান। নিয়োগের দাবিতে রাস্তায় বসে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। সে দিন সকাল থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিতে একে একে পৌঁছন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী, বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। বিমান বসু যখন বক্তব্য রাখছেন, সেই সময় হাজির হন কুণাল ঘোষ। চাকরি প্রার্থীরা তাঁকে দেখে স্লোগান দিতে শুরু করলেও পরে তাঁদের আশ্বস্ত করেন কুণাল। সেখানে বসেই ফোনে কথা বলেন ব্রাত্য বসুর সঙ্গে। পরে তিনিই জানান বৈঠকের কথা। ঠিক হয়, বৈঠকে তিনি নিজেও থাকবেন।
নিয়োগ দুর্নীতিতে শাসক দলকে যখন কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, তখন আন্দোলনকারীরা কেন শাসক দলের নেতাকেই তাঁদের প্রতিনিধি করবেন? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী এই প্রসঙ্গে বলেন, “কুণাল ঘোষ গিয়েছিল এসএসসি ও এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে বিভাজন ঘটাতে।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কুণালের এক্তিয়ার কি ওখানে যাওয়ার? তাঁর বক্তব্য, “এগুলো জলঘোলা করার চেষ্টা চলছে, বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করছে। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে মালিক-মালকিনকে পাঠাবে বৈঠক।” প্রার্থীদের অনেকেরই এই বিষয়ে সমর্থন নেই বলে মনে করেন তিনি।
বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষের দাবি, এভাবে সময় নষ্ট করতে চাইছে সরকার। কোনও সদিচ্ছা ছাড়াই বলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার পক্ষ থেকে কোনও সদিচ্ছা নেই। তিনি বলেন, “দুর্নীতির তদন্তে সরকার হস্তক্ষেপ করেনি, কারণ এর সঙ্গে শাসক দলের লোকজনই জড়িয়ে। কুণাল ঘোষ সেই দলের মুখপাত্র। মানুষের জনরোষ বাড়ছে সরকারের ওপরে। সেটাকে একটু ঠাণ্ডা করার জন্য নানারকম বিভ্রান্তির পরিকল্পনা করেছে সরকার, তার মুখ হিসেবে কুণাল ঘোষকে পাঠানো হচ্ছে। এভাবে সময় নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।”
শাসক দলের এই উপস্থিতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর একটাই বক্তব্য, চাকরি প্রার্থীরা কবে নিয়োগ পাবেন, সেটা যেন ঠিক হয়ে যায় বৈঠকে।