নিজেকে কয়লা মাফিয়া মানতে নারাজ, ফের সিবিআই দফতরে হাজির লালা
বারবার ডাকা হলেও নিজেকে ব্যবসায়ী বলেই পরিচয় দিচ্ছেন লালা (Lala)। তাঁকে জেরা করেও মিলছে না সদুত্তর
কলকাতা: এখনও রক্ষাকবচ আছে কয়লা পাচার কাণ্ডের (Coal Scam) মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার (Lala)। তাই চাইলেও তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারছেন না গোয়েন্দারা। শনিবার তৃতীয় বারের জন্য় তাঁকে তলব করা হল। এ দিন সকাল ১১ টায় হাজিরা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও এ দিন পুরুলিয়ার প্রাক্তন পুলিশ সুপার (Police Super) এস সেলভামূর্গানও হাজিরা দিয়েছেন।
দীর্ঘ দিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর গত মাসের শেষে প্রথম সিবিআই (CBI) দফতরে হাজির হন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) রক্ষাকবচ দেওয়ার পরই প্রথম গোয়েন্দা আদিকারিকদের কাছে ধরা দেন। কিন্তু তাঁর জবাবে সন্তুষ্ট নন গোয়েন্দারা। তাই তাঁকে বারবার ডেকে পাঠানো হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। লালা নিজেকে কয়লা মাফিয়া মানতে নারাজ। তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিচ্ছেন বলেই জানা গিয়েছে। তাই তাঁকে বারবার তলব করা হচ্ছে।
এই কয়লা পাচার-কাণ্ডে আগেও একাধিক আইপিএস-আইএএসকে তলব করা হয়েছে। পুরুলিয়া, আসানসোল অঞ্চলে কয়লা পাচারের কারবার চলাকালীন যে সব উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা সেই সব জায়গায় কর্তব্যরত ছিলেন, তাঁদেরই মূলত ডেকে পাঠানো হয়েছে। শনিবার এসেছেন পুরুলিয়ার প্রাক্তন পুলিশ সুপার এস সেলভামূর্গান। বর্তমানে সিআইডতে আছেন তিনি। তিনি পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার থাকাকালীন লালার কয়লা পাচারের কর্মকাণ্ড চলত বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। তিনি সেই সময় এই পাচারের সম্পর্কে জানতেন কিনা, জানলে আদৌ কোনও ব্যবস্থা নিয়েছিলেন কিনা, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁকে।
লালার কারবার প্রায় ২০০০ কোটি টাকার ছিল বলে সম্প্রতি জানতে পেরেছে সিবিআই। এই পাহাড়প্রমাণ অঙ্কের টাকা লেনদেনের গোড়ায় পৌঁছতে প্রথম দিনেই সাড়ে ৭ সাত ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। তাই বারবার ডাকা হচ্ছে তাঁকে। আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত রক্ষাকবচ রয়েছে তাঁর। এরপর ফের সিবিআই তাঁকে তলব করতে পারে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘নমাজ পড়ছিলাম, বিকট শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে’
গত নভেম্বরে সিবিআই মামলা দায়ের করে তদন্তে নামার পরই চোখ কপালে ওঠে গোয়েন্দাদের। লালার জাল যে কত দূর ছড়িয়েছে তার তল এখনও পাননি তদন্তকারীরা। হাজির হওয়ার আগে তাঁকে তিনবার তলব করে সিবিআই, হাজিরা এড়িয়ে যান লালা। গ্রেফতারি পরোয়ানা থেকে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, পলাতক ঘোষণা- কিছুতেই কোনও লাভ হয়নি। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে ঢাল করে সিবিআইয়ের দফতরে পৌঁছন লালা। সিবিআই সূত্রে খবর, কোন কোন প্রভাবশালী লালার ব্যবসাকে বাড়াতে সাহায্য করেছেন তাও জানতে চাওয়া হতে পারে। কয়েক হাজার কোটি টাকার এই ব্যবসা প্রভাবশালীদের হাত মাথায় না থাকলে চালানো সম্ভব নয় বলেই মনে করছে সিবিআই।