কলকাতা: সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রয়োজনে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতেও আপত্তি নেই বামেদের। রবিবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে এই বিষয়টি সাফ করে দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন জল্পনা জন্ম নিয়েছে। তৃণমূল যদিও বামেদের নতুন এই অবস্থানকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তবে যদি বিজেপির বিরুদ্ধে জোটে শামিল হয়ে সিপিএম লড়তে চায়, সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোডম্যাপ ধরেই তাদের লড়তে হবে, এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে তৃণমূল।
রবিবার তমলুকে প্রয়াত সিপিআইএম নেতা নির্মল জানার স্মরণসভায় যোগ দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা। সেই একই অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকেও। তমলুকের সাংসদ সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ না খুললেও বিমানবাবু যে মন্তব্য করেন, তা গত কয়েক ঘণ্টা ধরেই রাজ্য রাজনীতির অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে রয়েছে। বিমান বসুকে বলতে শোনা যায়, “সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী বা কচ্ছ থেকে কোহিমা পর্যন্ত কোনও আন্দোলন, সংগ্রামের প্রশ্ন দেখা দিলে বিজেপি বিরোধী সমস্ত শক্তির সঙ্গে আমরা একজোট হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত। এটা আগেও একাধিকবার হয়েছে, বিজেপি ছাড়া যে কোনও দলের সঙ্গেই আমরা কাজ করতে প্রস্তুত।”
স্পষ্টতই এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের নাম না নিলেও বিমানবাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন, যে দিল্লির রাজনীতির নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গেও হাত মেলাতে রাজি। কিন্তু তৃণমূল কি রাজি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য নির্বাচনের আগেই একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ভোটের পর বামেরা শূন্য হয়ে যাওয়ায় তাই এখন হাত মেলানো ছাড়া তাদের কাছে অন্য কোনও বিকল্পও নেই, এমনটাই মনে করছে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিমান বসুর এই মন্তব্যের পর তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ TV9 বাংলাকে জানান, “ওনারা আগে ঠিক করে নিন ওনারা কী করতে চান। ওই দলটার মতি স্থির নেই। ভোটের সময় তো বিজেমূল বিজেমূল করে নিজের প্রথমে লোকসভায় ও পরে বিধানসভায় শূন্য হয়ে গেল। বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইকে গোটা দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু সিপিএম ১৯৮৮ সালে যে ভুলটা কংগ্রেস বিরোধিতা করতে গিয়ে করেছিল, একই ভুলটা ২০১৯-এও করেছে। নিজেদের পুরো ভোটটাই বিজেপির দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে। তাই আগে ঠিক করে নিক কী করবে। তবে যদি লড়তে চায়, সেক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তির হয়ে লড়তে হবে। বিজেপির বি টিম হয়ে লড়া যাবে না।” আরও পড়ুন: ঝোলা কাঁধে-নথি হাতে বিদ্যাসাগর ভবনের বাইরে প্রধান শিক্ষকদের লম্বা লাইন! ভ্যাপসা গরমে বাড়ছে ক্ষোভ