কলকাতা: পাঁচ মাস পর চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন (Local Train)। নির্দেশিকা জারি করে বিষয়টি জানাল নবান্ন। আগামী রবিবার অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে আবারও রাজ্যে চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে ট্রেন। নিঃসন্দেহে রাজ্যবাসীর জন্য বড় স্বস্তি নবান্নের তরফে।
পূর্ব রেলওয়ের তরফে আগেই বলা হয়েছিল লোকাল ট্রেন চালু করার ক্ষেত্রে রেল সবরকম ভাবে প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। কিন্তু যেহেতু নবান্ন থেকে তা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তাই সেখান থেকে অনুমতি না মিললে রেলের কিছু করার নেই। তবে স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে যে পরিমাণ ভিড় বাড়ছিল, তাতে লোকাল ট্রেন চালু না করলে হিতে যে বিপরীত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই।
এরই মধ্যে নবান্নের তরফে শুক্রবার এক নির্দেশিকা জারি করে জানান হল আবারও লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু হচ্ছে এ রাজ্যে। আর তা শুরু হচ্ছে আগামী রবিবার থেকেই। তবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে রেল চলাচল কতটা সহজ হবে সে প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের সিপিআরও একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “এখনই রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আমরা তো আগেই বলেছিলাম ট্রেন চালাতে রেল তৈরি। আমরা চেষ্টা করব রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়েই ট্রেন চালানোর। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু রেলের ভূমিকা থাকবে তা নয়, জন সাধারণেরও ভূমিকা একই রকম থাকতে হবে। তাঁদেরও বুঝতে হবে সকলে এক ট্রেনে উঠতে পারবেন না। ট্রেনে ভিড় হলে পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করে যাওয়াই শ্রেয় হবে। এতে বিধিনিষেধ উলঙ্ঘন যেমন হবে, একই সঙ্গে সংক্রমণও বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।”
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুই এ প্রসঙ্গে বলেন, “কোভিড বিধি লোকাল ট্রেন চালানোটা সত্যিই খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এটা লাইফ লাইন। আর এই মুহূর্তে কোভিডকে সঙ্গে নিয়েও আমাদের জীবনযাত্রা কিন্তু অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু বিধি নিষেধ মেনেই তা স্বাভাবিক হয়েছে। নিউ নর্মালে কী ভাবে চলতে হবে তা আমরা সকলেই শিখে গিয়েছি। ট্রেন চালানোটাই বাকি ছিল বা স্কুল খোলা বাকি ছিল। সরকারও ধীরে ধীরে তাও খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে খুবই সদর্থক। তবে মানুষকে কিন্তু সচেতন হতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে কড়া হতে হবে! ট্রেন বন্ধ রেখে অন্যান্য যানবাহন চালিয়ে আখেড়ে বিশেষ লাভ কিছু হয়নি। তাই সমস্ত কিছু স্বাভাবিক রেখে সচেতন হয়ে চলাচল করাই পথ।”
অনির্বাণ দলুইয়ের মতে, “এই মুহুর্তে কোভিড গ্রাফ উঠছে বলে অনেকেরই মনে হবে ট্রেন বন্ধ রাখাই উচিৎ। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞান সেটা বলে না। সমস্ত পরিষেবা বন্ধ রেখে জনজীবন চালানোটা লক্ষ্য নয়। বরং এখন সমস্তরকম কোভিড বিধি মেনে কী ভাবে জীবন চালানো যায় সেদিকেই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।”
তবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালানো প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, “রেল তো দীর্ঘদিন ধরেই বলছে ওরা প্রস্তুত। যাত্রী সুরক্ষা, কোভিড বিধি মেনে ট্রেনে ওঠা এসব তো রাজ্যকে করতে হবে। ট্রেন চালানোর দায়িত্ব রেলের। বাকি তো রাজ্যকে দেখতে হবে। যদিও দুর্গাপুজোর সময় রাজ্যবাসীকে সরকারই উৎসাহ দিয়েছে বিধি নিষেধ ভেঙে তৃণমূলের আয়োজিত বিভিন্ন পুজোয় ভিড় করে করোনাকে বাড়াতে। ট্রেন চালানো ভাল কথা, কিন্তু সরকার যেন আবার নজরে রাখে কোনও বুর্জ খলিফা না হয়ে যায়।”
আরও পড়ুন: গোয়াতেও শুরু হল ‘খেলা’, তৃণমূলে যোগ দিলেন লিয়েন্ডার পেজ