দক্ষিণেশ্বর : কলকাতায় এসে নিজাম প্যালেসে হাজিরা না দিয়ে সোজা এসএসকেএম গিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই দফতরে হাজিরা এড়াতেই তিনি অসুস্থতার অজুহাত দিয়েছেন বলে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর বাড়ি ফিরেছেন অনুব্রত। কিন্তু সেই অসুস্থতা নিয়ে সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে প্রশ্ন তুলেছেন শাসক দলেরই কোনও কোনও নেতা। অভিষেক যদি গোয়েন্দা দফতরে হাজিরা দিতে পারেন, তাহলে অনুব্রত কেন নয়? সেই প্রশ্ন তুলেছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতারাই আর এবার এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করে বিতর্ক উস্কে দিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
মঙ্গলবার অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষ্যে দক্ষিণেশ্বর পুজো দিতে গিয়ে মদন মিত্র দাবি করেন, সিবিআই এলেই অনুব্রত মণ্ডল অসুস্থ হয়ে পড়েন নাকি অনুব্রত অসুস্থ হলেই সিবিআই আসে, এই বিষয়টা পুরোটাই আপেক্ষিক। পরে ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, অনুব্রত অসুস্থ হলে তখনই সিবিআই আসে। কখন অনুব্রত-র পা ফুলছে, সেই খোঁজ রাখে সিবিআই।” তিনি নিজে সারদা-কাণ্ডে জেল-বন্দি থাকাকালীনও যে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন, সে কথা উল্লেখ করেন মদন মিত্র। তিনি জানান, তাঁর শরীরে ১৩ রকমের রোগের সন্ধান পেয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
পরে আবার মদন বলেন, “অনুব্রত আমার ছোট ভাই। সুস্থ হলে ও অবশ্যই সিবিআই দফতরে যাবে।” এই প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। মদন মিত্র জানান, অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে একটানা জেরা করেছিল ইডি। অভিষেক নিজেও ইডি-র হাজিরা এড়িয়ে যাননি। তাই তিনি মনে করেন অনুব্রতও হাজিরা দেবেন।
এর আগে এ ভাবেই অনুব্রতকে কটাক্ষ করেছিলেন আর এক তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। সারদা-কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন কুণাল। অনুব্রত এসএসকেএমে ভর্তি হওয়ার পর সেই সময়ের কথা উল্লেখ করে কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, কোনও পরিস্থিতিতেই তিনি হাজিরা এড়াননি। কারণ, তিনি ‘নির্দোষ’।
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় নিজাম প্যালেসে ঠিক যে দিন হাজির হওয়ার কথা ছিল অনুব্রত-র। সে দিনই কাকতালীয়ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাঁকে ভর্তি করা হয়, এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে। শরীর খারাপ হওয়ার কারণে যেতে পারলেন না বলে আইনজীবী মারফৎ জানান সিবিআই দফতরে।