কলকাতা: আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও হাজির হলেন না মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্য়ায়। তবে ১২ বছর পর নিয়োগের নথি দেওয়া হল মামলাকারীকে। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) হাতে হাতেই নিয়োগের নথি তুলে দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদ সভাপতি হাজির না হলেও ওই প্রার্থীর নিয়োগের প্রাথমিক নথি আদালতে জমা দিল বোর্ড। আগামিকাল, শুক্রবার বোর্ডের অফিস থেকে নিয়োগপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে মামলাকারীকে।
১২ বছর ধরে চাকরি পাননি পূর্ব মেদিনীপুরের অঞ্জন কুমার খাটুয়া। তিনি একটি চোখে দেখতে পান না। আদালতে মামলা হওয়ার পর গত মাসে হাইকোর্ট তাঁকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই মতো অঞ্জনের সুপারিশপত্র মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদকে পাঠায় স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। কিন্তু তারপরও চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরই আদালত অবমাননার রুল জারি হয়।
বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামনুজ গঙ্গোপাধ্যায়কে তলব করে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিংহের একক বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, দুপুর ২ টোয় রামানুজকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে।
শুধু নিয়োগ না পাওয়া নয়, আদালতে পর্ষদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগও করেছেন মামলাকারী। তিনি অভিযোগ করেন, পর্ষদ অফিসে গেলে এক আধিকারিক তাঁকে বলেন, ‘আপনারা কি মনে করেন যখন খুশি নিয়োগপত্র দেওয়া যায়? আপনারা মেদিনীপুর থেকে এসেছেন। প্রচুর টাকা রয়েছে, তাই মামলা দায়ের করে দিয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্ট খারাপ নির্দেশ দেবে আর তা পালন করতে হবে পর্ষদকে?’ দৃষ্টিহীনতা হওয়ায় তাঁকে অপমান করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন ওই ব্যক্তি। তাঁর দাবি, তাঁকে বলা হয়েছিল, ‘অন্ধ হয়ে চাকরি করতে চলে এসেছেন। আপনি কী ভাবে পড়াবেন?’
এদিন সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, মামলাকারীর যে অভিযোগ, সেটা ঠিক না ভুল, আমরা জানি। ওখানে কী হয়, সেটা এখন ওপেন সিক্রেট। আমাদের চোখ খোলা আছে।’ মন্তব্য বিচারপতি অমৃতা সিনহার। হেনস্থার অভিযোগ গ্রহণ করেছে আদালত। সেই অনুযায়ী কোর্ট আগামীতে পদক্ষেপ করবে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
বোর্ডের আইনজীবী কোয়েলি ভট্টাচার্য দাবি করেন, প্রার্থীকে বোর্ডের অফিসে হেনস্থার অভিযোগ ভিত্তিহীন। এমন কোনও কথা কেউ বলেনি। মন গড়া অভিযোগ করা হচ্ছে। ১৫ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।