কলকাতা: নবান্নে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠক (Eastern Zonal Council Meeting) চলে। সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। নির্ধারিত সময়ের ৪৩ মিনিট বেশি সময় ধরে চলে বৈঠক। বৈঠক শেষে নবান্নের চোদ্দতলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘরে পৌঁছে যান অমিত শাহ। সেখানেও প্রায় ১৭ মিনিট ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর এই একান্ত আলাপ নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। অমিত শাহর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলাদা করে কোনও বৈঠক হবে কি না, সেই নিয়ে জোর জল্পনা ছড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বৈঠক শেষে মধ্যাহ্নভোজের পর জল্পনা সত্যি করে মমতা-শাহ একান্ত আলোচনা।
উল্লেখ্য, পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠক আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অমিত শাহর আলাদা কোনও বৈঠক পূর্ব নির্ধারিত ছিল না। শেষ পর্যন্ত এদিন পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠক শেষে দুপুর ২ টো ১০ মিনিটে নবান্নের চোদ্দ তলায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্ধারিত ঘরে যান অমিত শাহ। ১৭ মিনিট সেখানে থাকার পর দুপুর ২টো ২৭ মিনিটে সেখান থেকে বেরিয়ে যান অমিত শাহ। কী কী নিয়ে আলোচনা হল তাঁদের মধ্যে? এই নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, কেন্দ্রীয় এজেন্সির অতিসক্রিয়তার অভিযোগ এবং রাজ্যের বিভিন্ন বকেয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে একান্ত আলাপে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঘরে নিয়ে গিয়ে অন্দরমহল দেখিয়েছেন না চা খাইয়েছেন বলতে পারব না। সীমান্তে বিএসএফ-কে রাজ্যের সহযোগিতা করা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানান শুভেন্দু। মমতা-অমিত শাহ বৈঠক নিয়েও সেভাবে মুখ খুলতে চাননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সালে যখন রাজনাথ সিং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখনও নবান্নে এই বৈঠক হয়েছিল। সেই সময় রাজনাথ সিংও সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সেই সাক্ষাৎ পর্বের তুলনায় এবারের সাক্ষাৎ পর্ব অনেকটাই আলাদা। কারণ, রাজনীতির পরিসরে রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক ব্যক্তিগত স্তরে অনেকটাই ভাল বলে শোনা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে বার বার কেন্দ্রীয় এজেন্সির অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে রাজ্য। এমন অবস্থায় নবান্নে মমতা-শাহ আলাদা করে সাক্ষাৎ স্বাভাবিকভাবেই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।