কলকাতা : যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়নি, এই দাবিতে বহুদিন ধরে শহরের রাস্তায় চলছে ধর্না। টেট বা এসএলএসটি, চাকরি প্রার্থীদের সেই ধর্নামঞ্চের ছবি আজ অনেকেরই চেনা। ক্রমে সেই সব আন্দোলনকারীদের মামলার ভিত্তিতেই আজ শুরু হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতির সিবিআই তদন্ত। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকেও গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। চাকরি প্রার্থীরা বারবার দাবি করে থাকেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও নিয়োগ হচ্ছে না। এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, বিক্ষোভকারীদের চাকরি দেওয়ার কথা তিনি বলেছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে।
সোমবার সরাসরি নিয়োগ দুর্নীতির কথা না বললেও কেলেঙ্কারির বিষয়ে একাধিক মন্তব্য করেন মমতা। এ দিন শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয়েছিলেন মমতা। সেখানে তিনি বিক্ষোভকারীদের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘কয়েকটা ছেলেমেয়ে বসে ছিল রাস্তায়। একবার আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল।’ মমতার দাবি, তিনি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে বলেছিলেন যাতে ওই চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়। কিন্তু প্রাপ্ত নম্বরই চাকরি না পাওয়ার কারণ বলে মমতাকে জানিয়েছিলেন সেই শিক্ষামন্ত্রী। এই দাবি করে মমতা আরও বলেন, ‘আমি তো বেড়ে খেলি, আমার তো দয়া মায়া একটু বেশি! তাই বলেছিলাম, বাচ্চা ছেলেমেয়ে করে দিন না… আমি কিন্তু বলেছিলাম।’
উল্লেখ্য, বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রী পদে রয়েছেন ব্রাত্য বসু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পরও কিছুদিন এই দফতর সামলেছিলেন ব্রাত্য। পরে ২০২১ নির্বাচনের পর ফের সেই দফতর পান তিনি। আর ২০১৬ নির্বাচনের পর শিক্ষামন্ত্রী পদ পেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বর্তমানে আদালতে নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলা চলছে। নম্বর বেশি থাকা সত্ত্বেও অনেকে চাকরি পায়নি বলে অভিযোগ। এরকমই একটি অভিযোগে প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে এখনও অনেক চাকরি প্রার্থী একই দাবি নিয়ে রাস্তায় বসে রয়েছেন। তাঁদের একটাই বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী কবে তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখবেন? কবে হবে নিয়োগ?
এ দিন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, শিক্ষক দিবসে হবু শিক্ষকদের রাস্তায় বসে থাকতে দেখে খারাপ লাগছে। ভাল লাগছে না। তিনি উল্লেখ করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়ে এঁদের জন্য আসন বাড়িয়েছিলেন, কিন্তু কিছু আইনি জটিলতার কারণে এখনও পর্যন্ত সে নিয়োগ হয়নি। আর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে রাজনীতিতে এনেছিলাম। এর থেকে বেশি কিছু বলব না।’
এ প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সব জানেন। ওঁকে সেলাম ঠুকে পার্থ বাবু বা ব্রাত্য বাবুরা যা করার করেছেন। সব জেনেও উনি দুর্নীতির পক্ষে দঁড়িয়েছেন।’