কলকাতা: সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে নিযুক্ত ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকের আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাতেও অনেককে বরখাস্ত করা হয়েছে। একাধিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় তদন্তর করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। বেনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভের ছবি দেখা যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। এই পরিস্থিতির মধ্যেই নিয়োগ নিয়ে বিরোধীদের চাচাছোঁলা ভাষায় আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় গিয়ে তিনি দাবি করেছেন, তিনি কারও চাকরি খাননি। নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও আক্রমণ করেছেন মমতা।
এ দিন অধিবেশন কক্ষে দাঁড়িয়ে নিয়োগ নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন মমতা। তিনি উল্লেখ করেন, কারও চাকরি যাক, তিনি চান না। তিনি দাবি করেন, ২০১১ সালে ক্ষমতা আসার পর তিনি বাম আমলের কারও চাকরি নিয়ে প্রশ্ন তোলেনেনি, কারও চাকরিও যায়নি। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন শাসক দলকে কোণঠাসা করতে তৎপর বিজেপি, তখন বিধানসভায় সরাসরি পদ্ম শিবিরের দিকেই আঙুল তুললেন মমতা।
ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার অনেকের চাকরি ফিরিয়ে দেবে বলেছিল। কিন্তু ক্ষমতায় এলেও সেই চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কারও চাকরি খাব না, এটা ত্রিপুরা নয়।’ শুধু তাই নয়, বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘১৭ হাজার লোকের চাকরি চলে গেলে, আপনাদের বাড়িতে পাঠাব।’ এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘কারও চাকরি গেলে আপনার বাড়িতে গিয়ে ধর্ণা দেবে।’ শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, তাঁকেই এ কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, চাকরি প্রার্থীদের বাড়িতে পাঠাবেন বলে কার্যত হুমকি দিয়েছেন মমতা। এতে আইনৃ- শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। এ ছাড়া নিয়োগে বেনিয়মে শুভেন্দুরও হাত ছিল বলে যে দাবি করেছেন মমতা, তাঁর জবাবে শুভেন্দু বলেছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে চাকরি তো দূরের কথা, কোনও দিন একটা ব্ল্যাকবোর্ডও চাইনি।
বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, বাম আমলে কোনও নিয়োগ দুর্নীতি হয়নি। তিনি বলেন, এত মিথ্যা কথা বলবেন না। নিজে করে অন্যের কারও ঘাড়ে ফেলা উচিত নয়। ১০ বছরে ৮০ ভাগ নিয়োগেই দুর্নীতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুজন।