কলকাতা: আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে তৃণমূল। বুধবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। একই সঙ্গে শহিদ মিনার ময়দানে ছাত্র-যুব সমাবেশ করবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। সেই সভা থেকে বিরোধীদের কড়া বার্তা দেওয়া হবে বলেই অনুমান রাজনৈতিক মহলের। আজ দুপুর ১২টা নাগাদ ধরনায় বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামীকাল পর্যন্ত টানা ধরনা দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। তবে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, পাশাপাশি পথে নামবেন বিরোধীরাও। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে এ দিন রাজপথে নামবে বামফ্রন্টও। কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে রামলীলা ময়দান থেকে হবে বামেদের মিছিল। অপরদিকে, রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের প্রতিবাদে প্রদেশ অফিস থেকে হবে কংগ্রেসর মিছিল। পিছিয়ে নেই বিজেপিও। শ্যামবাজারে হবে বিজেপির ধরনা।
সাম্প্রতিককালে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে গিয়েছে একাধিক তৃণমূল যুবনেতার নাম। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাই ছাত্র-যুবদের বার্তা দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কী বার্তা দেবেন অভিষেক? বিরোধীদের জবাব দিতে ব্যবহার করবেন কোন হাতিয়ার? ধর্মতলার সভার দিকে তাকিয়ে তৃণমূল শিবির। তৃণমূল যুব কংগ্রেস এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশের ইস্যু হতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বাংলাকে বঞ্চনা এবং ইডি, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার। অন্যদিকে, পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ মিলছে না বলে অভিযোগ তুলে ধরনায় বসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলার মানুষের নায্য পাওনার দাবিতে রাস্তায় নামছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়। মমতা-অভিষেকের আন্দোলনের সূচনা হচ্ছে। কেন্দ্র ষড়যন্ত্র করে বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে।’
রেড রোডে আম্বেদকর মূর্তির সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা শুরু হবে বুধবার বেলা ১২ টা নাগাদ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা অবধি সেই ধরনা চলার কথা। সূত্রের খবর, রাজ্যের একাধিক দফতরের মন্ত্রী, দলের সাংগঠনিক নেতৃত্ব সেখানে হাজির থাকবেন।
অন্যদিকে ব্লকে ব্লকেও এই ধরনা কর্মসূচি গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোডের দিকে মুখ করে বসবেন। রেড রোডের উভয় প্রান্তেই ব্যারিকেড করা হয়েছে। অন্যদিকে ছাত্র-যুব সমাবেশকে কার্যত ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের সর্বত্র এই সমাবেশ নিয়ে নেতারা মিটিং করেছেন। দলীয় সূত্রে দাবি রেকর্ড সংখ্যক ছাত্র-যুব জমায়েত হবে এই সমাবেশে। এদিন সকাল থেকেই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মঞ্চ বাঁধার কাজ শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তবে শুধু রাজনৈতিক দলগুলি নয়। এ দিন লক্ষ্য থাকবে ডিএ আন্দোলনরত কর্মীদের দিকেও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাস্থলের কিছুটা দূরে রাজ্য সরকারের বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে ধরনা দেবেন তাঁরা। এ দিন, আন্দোলনরত সরকারি কর্মীরা পুলিশকে আর্জি জানিয়েছেন যাতে মাইক খুলে ফেলা হয়। কারণ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার মাইক সরকারি কর্মীদের ধরনা মঞ্চের দিকে তাক করে লাগান হয়েছে।