কলকাতা: মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। তার আগে হরিয়ানাতেও আশানুরূপ ফল করতে পারেনি দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতৃত্ব নিয়ে ফের বিতর্ক উস্কে দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ইন্ডিয়া জোটকে নেতৃত্ব দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইগো ছেড়ে তৃণমূল সুপ্রিমোকে ইন্ডিয়া জোটের নেত্রী হিসেবে সামনে আনা উচিত।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দিতে গত বছরের মাঝামাঝি বিরোধী দলগুলি ইন্ডিয়া জোট তৈরি করে। কিন্তু, বিভিন্ন রাজ্যে আসনরফা নিয়ে জোটের শরিকদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে আসনরফা হয়নি কংগ্রেসের। পশ্চিমবঙ্গে তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ইন্ডিয়া জোটের শরিক সিপিএম বাংলায় কংগ্রেসের হাত ধরেছিল।
লোকসভা নির্বাচনে আগে বাংলায় রাহুলের ন্যায়যাত্রা নিয়েও কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে চাপানউতোর বাড়ে। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, রাহুলের ন্যায়যাত্রা বাংলায় প্রবেশের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল কংগ্রেসের। লোকসভা ভোটের প্রচারে মমতাও বলেছিলেন, ইন্ডিয়া জোট তিনি তৈরি করেছেন। নামও তাঁর দেওয়া।
লোকসভা নির্বাচনের পর হরিয়ানা ও জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনে কংগ্রেসের ফল আশানুরূপ হয়নি। জম্মু ও কাশ্মীরে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে জোটে ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেস। কিন্তু, তাদের আসন কমেছে। শনিবার ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্রের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। মহারাষ্ট্রে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। ঝাড়খণ্ডে জেএমএম-র সঙ্গে জোটে ক্ষমতা দখল করেছে।
অন্যদিকে, বাংলায় ৬ আসনেও গতকাল ফলাফল প্রকাশ হয়। উপনির্বাচনে ৬টি আসনই জেতে তৃণমূল। তারপরই এদিন ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্ব নিয়ে সওয়াল করলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “সারা ভারতব্যাপী কংগ্রেস পিছিয়ে পড়ছে। অন্যান্য বিরোধী দল পিছিয়ে পড়ছে। ইগো ছেড়ে দিয়ে ইন্ডিয়া জোটের নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে আনা উচিত। তাঁকে সামনে এনে লড়াই করা উচিত। যাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁদের স্বীকার করতে হবে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। হরিয়ানার পর মহারাষ্ট্রেও ব্যর্থ হয়েছেন। দ্বিধাহীন কণ্ঠে সমস্ত বিরোধীদের আপিল করব, ইগো ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেনে নিন নেত্রী হিসেবে। মেনে নিন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া কিছু হবে না। ভারতবর্ষের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেত্রী হিসেবে মনে করে। তাঁর প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর সারা ভারতবর্ষের মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।”