কলকাতা: ‘আমি হিন্দু, আমি মুসলিম, আমি শিখ ও দিন শেষে আমি একজন ভারতীয়’, সোমবার ইদের সকালে রেড রোডে গিয়ে সাফ বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন শহরের প্রাণকেন্দ্রে নমাজ পড়তে আসা মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তারপর ওঠেন মঞ্চে। গোটা পর্বে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
এদিন রেড রোডের মঞ্চ থেকে রাজ্যের দুই বিরোধী দলের বিরুদ্ধে তির ছোড়েন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর কথায়, ‘রাম-বাম আমাকে প্রশ্ন করে, আমি হিন্দু কিনা? আমি উত্তর দিয়েছি, আমি হিন্দু, মুসলিম, শিখ ও দিনশেষে ভারতীয়। এরা কী চায়? শুধু বিভাজনের রাজনীতি করে। আমি নিজের জীবন দেশের জন্য ত্যাগ করেছি।’
এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর মুখে রামনবমীর আগে শোনা গিয়েছিল, ‘কেউ কেউ অশান্তি চায়, দাঙ্গা চায়। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না।’ রাজ্যে ইতিমধ্যেই রামনবমীকে কেন্দ্র করে পারদ চড়ছে রাজনীতির। এমন পরিস্থিতিতে রাজনীতির পারদপতন ঘটাতে মুখ্যমন্ত্রী হাতিয়ার করলেন ‘সম্প্রীতিকেই’। সোমবার রেড রোডের ভাষণে তিনি বলেন, ‘খুশির ইদে, ঘরে সুখ আনুন। দাঙ্গার প্ররোচনা নয়। এটা ওদের একটা পরিকল্পনা। এই খেলায় পা দেবেন না। যদি কেউ কিছু বলে, মনে রাখবেন আপনাদের সঙ্গে দিদি আছে, অভিষেক আছে, এই গোটা সরকার আছে। কেউ আপনাদের কিছু করতে পারবে না।’
বিজেপিকে ইঙ্গিতে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ওদের কথায় কান দেবেন না। ওদের কথা উত্তর সময় এলে দেবেন। কিন্তু এখন ওদের কোনও ভাবে ছোঁবেন পর্যন্ত না।’ এরপর রাজ্যের বিরোধী দলের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, ‘কে কী পরবে, কে কী খাবে, সবেতেই ওদের নজরদারি চালাতে হয়। নবরাত্রি চলছে, আমি তাদেরকেও শুভেচ্ছা জানাই। কিন্তু আমি চাই না রাজ্য়ে কোনও ভাবে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হোক। দাঙ্গা কখনওই সাধারণ মানুষ করে না, রাজনৈতিক দলগুলো করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি স্বামী বিবেকানন্দের ধর্ম পালন করি, রামকৃষ্ণের ধর্ম পালন করি। কিন্তু ওরা যে ধর্মটা বানিয়েছে ওটা আমি মান্যতা দিই না। ওটা হিন্দু ধর্ম-বিরোধীও।’