কলকাতা : জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে (TMC Working Committee Meeting) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ফোকাসে জাতীয় রাজনীতি। কালীঘাটে শুক্রবারের হাইভোল্টেজ বৈঠকে বেশিরভাগ আলোচনাই ছিল জাতীয় রাজনীতির প্রসঙ্গে। একদিকে যেমন দল বড় হওয়ার কথা বলতে শোনা গিয়েছে মমতার মুখে, তেমনই একজোট হয়ে সর্বভারতীয় রাজনীতির আঙিনায় পদচিহ্ন আরও স্পষ্ট করার বার্তা দিয়েছেন নেত্রী। তূণমূল সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো গোয়াতে আগামী দিনে আরও বেশি নজর দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, “আগামী দিনে আমরা গোয়ায় আরও ভাল করব। ওখানকার মানুষ বিজেপিকে চায় না। আমাদের ওখানে আরও মানুষের কাছে যেতে হবে।” বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষিতে বিগত কিছুদিন ধরে যে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, তার থেকে পুরোপুরি একশো আশি ডিগ্রি উল্টো মমতার এই কথা।
কিছুদিন আগে যখন আইপ্যাক ও তৃণমূলের মধ্যে সম্পর্কের ফাটলের কথা প্রকাশ্যে এসেছিল, সেই সময়ই কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল মমতা নাকি চাইছিলেন না গোয়ার ময়দানে ভোটে নামতে। ত্রিপুরা বা গোয়ার মতো ছোট রাজ্যগুলির তুলনায় উত্তর প্রদেশের মতো বড় রাজ্যে লড়াই করতে চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু আইপ্যাকের থেকেই নাকি পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, গোয়া বা ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলির দিকে এগোতে। এমনকী কিছুদিন আগে অখিলেশ যাদবের সমর্থনে উত্তর প্রদেশে গিয়েও মমতার মুখে শোনা গিয়েছিল, “আমি উত্তরপ্রদেশে এসেছি। গোয়ায় যায়নি। কারণ উত্তরপ্রদেশের লড়াই হল মর্যাদার লড়াই।”
এমনকী উত্তর প্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগেও মমতাকে গোয়ার নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্ক প্রশ্ন করা হলে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “গোয়া অন্য কেউ দেখছে। আমি গোয়া দেখছি না। বৃহত্তর স্বার্থের জন্য আমি অন্য়ান্য জায়গায় যাচ্ছি।” সেই বক্তব্যের দেড় সপ্তাহ অতিক্রান্ত হতে না হতেই ফের মমতার মুখে গোয়ার প্রসঙ্গ। আর এবার একেবারে ভিন্ন সুর। এবার নেত্রী যে গোয়ায় শুধু নজরই দিচ্ছেন তাই নয়, সেই সঙ্গে আগামী দিনে গোয়া জয়ের কথাও ভাবছেন। স্বাভাবিকভাবেই মমতার এই ভিন্ন চিন্তা ভাবনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
উল্লেখ্য গোয়ার নির্বাচনের মূল দায়িত্বে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বার বার গোয়ায় উড়ে গিয়েছেন তিনি। অথচ উত্তর প্রদেশ যাওয়ার আগে মমতা সেদিন বলে গিয়েছিলেন, “কেউ একজন গোয়া দেখছে।” ভাইপোর নাম পর্যন্ত সেদিন মুখে আনেননি নেত্রী। তৃণমূলের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কোনওদিন ঘটেছে বলে মনে করা যায় না। এরপর শুক্রবারের বৈঠকে অভিষেকের হাতেই ফের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব এককভাবে তুলে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তারপর আবার অভিষেকের গোয়াতে বাড়তি নজর। তাহলে কি এবার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে যে শক্তি সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, তাতে ইতি পড়তে চলেছে? নাকি অন্য কিছু অপেক্ষা করে রয়েছে তৃণমূলের আগামীতে? এমনই বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা, জবাব মিলবে যথা সময়ে।
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee: শুধুই দলের প্রচার! কোনও ব্যক্তি প্রচার নয়… সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়াকড়ি মমতার