Mamata Banerjee: টিভি চ্যানেল ধর্ষণধারী, টিআরপি বাড়াতে খুন-ধর্ষণ দেখাচ্ছে: মমতা
Physical Harassment: রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ঠিকঠাক রয়েছে, তা বোঝানোর মরিয়া চেষ্টা দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। উল্টে, রাজ্যে ধর্ষণের বাড়বাড়ন্তের জন্য সংবাদ মাধ্যমকেই দায়ী করলেন তিনি। বললেন, "আগে টেলিভিশন চ্যানেল ছিল দর্শনধারী, এখন কেউ কেউ বলে ধর্ষণধারী।"
কলকাতা : রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে মুখ পুড়ছে রাজ্যের। হাঁসখালির ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া আরও বেশ কিছু ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে আইপিএস দময়ন্তী সেনের উপর। একের পর এক এমন ঘটনায় অস্বস্তি বাড়ছে রাজ্যের। এরই মধ্যে বুধবার বিকেলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ঠিকঠাক রয়েছে, তা বোঝানোর মরিয়া চেষ্টা দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। উল্টে, রাজ্যে ধর্ষণের বাড়বাড়ন্তের জন্য সংবাদ মাধ্যমকেই দায়ী করলেন তিনি। বললেন, “আগে টেলিভিশন চ্যানেল ছিল দর্শনধারী, এখন কেউ কেউ বলে ধর্ষণধারী।” যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা আমার কথা নয়, কেউ কেউ এ কথা বলেন। মমতার কথায়, “এমনি আমাদের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালই। কিন্তু কিছু কিছু টেলিভিশন চ্যানেল নিজেদের টিআরপি বাড়ানোর জন্য এমন করছে… রোজ খুন দেখিয়ে আরও ধর্ষণ দেখিয়ে।”
সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মমতার বক্তব্য, “ধর্ষণ হোক বা না হোক, অভিযোগ পেলেই দিয়ে দিচ্ছে। মিডিয়া ট্রায়াল না করে আগে আপনারা খোঁজ নিন, প্রশাসনের থেকে ক্রস চেক করুন এমন ঘটনা ঘটেছে কি না। যদি ঘটে থাকে তাহলে তা জানুন। ঘটনা ঘটলেই তো আর কেউ সঙ্গে সঙ্গে বলতে পারবে না। তাকে একটু তদন্ত করার সময় দিতে হবে। যদি সকাল ১০ টায় ঘটনা ঘটে, নিশ্চয় বিকেল ৪ টের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট আপনাদের দিতে পারবে।”মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “কতগুলি ঘটনা আছে, যেগুলি ফরেন্সিকের উপর নির্ভর করে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের উপর নির্ভর করে। আন্দাজে বলা যায় না। সেগুলি লক্ষ্য রাখতে হবে।”
রাজ্যে বাড়তে থাকা ধর্ষণের অভিযোগের সাফাই দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের রাজ্যে একটি জিনিস আছে, এখানে বেশি গণতন্ত্র আছে বলে এখানে বেশি অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু উত্তর প্রদেশে, গুজরাতে, মধ্যপ্রদেশে অভিযোগ করতে দেয় না।” এ ক্ষেত্রে অবশ্য কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানের কথাও উঠে এসেছিল মুখ্যমন্ত্রীর মুখে, যদিও তিনি সঙ্গে সঙ্গে সামাল দিয়ে বলেন, “রাজস্থানে দেয় কি না আমি জানি না।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের এখানে একটি ঘটনা হলেই আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলি যদি ঘটনাটি সত্যিই ঘটে থাকে। তাতে যদি আমার তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও ব্লক সভাপতির নামও আসে, আমি তাঁকেও বিনা তদন্তে গ্রেফতারের নির্দেশ দিই। যেটা আমার করা উচিত নয়।” এরপরই সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, “আপনারা চালিয়ে অমুক লোক অভিযোগ জানিয়েছে ওনার নামে যে উনি নাকি ধর্ষণের চেষ্টা করার। আপনি কি দেখেছেন ঘটনাটি সত্যি কি না?”
রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, রাজ্যের একের পর এক ধর্ষণের অভিযোগে কার্যত নাজেহাল অবস্থা রাজ্যের শাসক দলের। বিজেপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির থেকেও ক্রমাগত চাপ আসছে। তার সঙ্গে তো আদালতের চাপ রয়েছেই। বুধবার বিকেলে মমতার কথায় রাজ্য সরকারের উপর সেই চাপের দৃশ্যটাই যেন বার বার ফুটে উঠছিল। এমনই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।