প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ, কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরে শিরোনামে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’। দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পরই ‘জাগো বাংলা’র জন্য কলম ধরেন প্রাক্তন সিপিএম নেতা অনিল বিশ্বাসের মেয়ে অজন্তা। সেই ইস্যুতে রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে। অজন্তার পর কলম ধরেছেন ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরাও। আর এ বার ‘জাগো বাংলা’র জন্য লেখা চাওয়া হলে তা প্রত্যাখ্যান করলেন বাম মনোভাবাপন্ন কবি মন্দাক্রান্তা সেন। বললেন, ‘ওদের সাহস, ওদের স্পর্ধা দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি।’ তবে ভবিষ্যতে যদি লেখেন, তাহলে বিরোধিতা করেই লিখবেন, এমনটা জানিয়েছেন কবি মন্দাক্রান্তা।
বুধবার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলেই মন্দাক্রান্তা জানান জাগো বাংলার জন্য তাঁর কাছে লেখা চাওয়া হয়েছিল। হোয়টসঅ্যাপ করে লেখা চায় তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে মন্দাক্রান্তা বলেন, ‘জাগো বাংলা যাদের মুখপত্র আমি তাদের বিরোধী। তাই ওই কাগজে লেখার কোনও যুক্তি নেই।’ বিতর্কের পরও বাম মনোভাবাপন্নদের কাছেই কেন লেখা চাওয়া হচ্ছে? তা জানতে চাইলে মন্দাক্রান্ত বলেন, ‘ওরা দেখতে চাইছে শিরদাঁড়া কতটা নোয়ানো যায়। কিন্তু এদের ওদের শিরদাঁড়া নুয়ে যাবে, আমারটা নয়।’ তিনি আরও বলেন, লেখা চাওয়ার পর থেকেই তাঁর মনে প্রশ্ন উঠছে, ‘এটা কোনও টোপ নয় তো?’ তাঁর আদর্শ জানা সত্ত্বেও কেন লেখা চাওয়া হল? আপাতত প্রত্যাখ্যান করলেও মন্দাক্রান্তা জানান, ভবিষ্যতে যদি লেখেন তাহলে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্থির রেখে বিরোধিতা করেই লিখবেন। তিনি বলেন, ‘আমার অবস্থানে থেকে যদি কিছু মাথায় আসে, তাহলে লিখতেও পারি। দেখব ছাপায় কি না, যদিও সেটা পরের ব্যাপার।’ তবে শিরদাঁড়ার প্রশ্নে অজন্তা বিশ্বাসদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না বলেই জানান মন্দাক্রান্তা।
বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রত্যেকেরই লেখার স্বাধীনতা আছে। কিন্তু বিবেচনা করা উচিৎ যে তিনি কোথায় লেখা দেবেন।’ সুজন বলেন, ‘মন্দাক্রান্তা সেন বুঝিয়ে দিয়েছেন মেরুদণ্ডটা শক্ত আছে। অফার পেলেই সবাই তা নেয় না, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমি মন্দাক্রান্তাকে শুভেচ্ছা জানাই।’ নাম না করে অজন্তাকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘বড় নেতার মেয়ের কতটা বিবেচনা, সে তো দেখাই গেল।’
উল্লেখ্য, জাগো বাংলায় অজন্তা বিশ্বাসের লেখা নিয়ে বিরূপ মনোভাবই প্রকাশ করেছে বাম নেতৃত্ব। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে লেখার কারণ নিয়ে অজন্তার সঙ্গে সিপিএম নেতৃত্বের প্রাথমিক কথা হয়েছে। অনিল কন্যার সেই জবাবে সিপিএম সন্তুষ্ট নয়। তবে পরবর্তীতে যে শোকজ চিঠি অজন্তার কাছে পাঠিয়েছিল তাঁর ইউনিট, তার উত্তর অবশ্য আসেনি। শো কজের জবাব অজন্তা দেননি। যে ‘অপরাধ’ করেছেন অজন্তা বিশ্বাস, তাতে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে। আর তা না হলে বহিষ্কারের সম্ভাবনাই জোরাল হচ্ছে। সিপিএমের অন্দরে কান পাতলে সে কথা শোনা যাচ্ছে। আরও পড়ুন: শুভেন্দু ঘনিষ্ট রাখালকে গ্রেফতার করতে পারবে না রাজ্য, চিদম্বরম মানলেন, একটা ভুল হয়েছে