কলকাতা: শূন্যপদ তৈরিতে ‘ম্যাজিশিয়ান’ মানিক। জেলায় শূন্যপদ নেই, অথচ টাকা দিলেই তৈরি শূন্যপদ। ২০২১ সালের ঘটনায় মহাবিপাকে প্রাক্তন পর্যদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। ২০২১ সালের ৬ জুলাই শূন্যপদের তালিকা বের হয়। ২৩ দিন পর ৩০ জুলাই নতুন শূন্যপদ তৈরি করে ফেলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ২৩ দিনে কী করে তৈরি হল শূন্যপদ? পছন্দের জেলায় চাকরি দিতে টাকার বিনিময়ে?
২৩ দিনের ‘ম্যাজিকেই’ আপাতত মানিকের শিরে সংক্রান্তি। ২০২০ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চরম বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আবেদনকারীদের দেওয়াই হয়নি ‘হোম ডিস্ট্রিক্ট’ প্রেফারেন্স। তদন্তকারীদের হাতে তথ্য এসেছে, ৪০০ থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে প্রাথমিক স্কুলে পোস্টিং পেয়েছেন যোগ্য শিক্ষকরা। ২৩ দিন পর ‘মানিকের ম্যাজিকে’ ওই জেলাতেই চাকরি অন্যদের, যেখানে শূন্যপদই ছিল না। ম্যাজিশিয়ান মানিকের কীর্তিতে অবাক শিক্ষামহল।
এরকমই একটা ঘটনার কথা উঠে এল TV9 বাংলার হাতে।
২০২০ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই এখন প্রাথমিকের শিক্ষক। ক্যামেরার সামনে মুখ খুললে বিপদে পড়তে পারেন ইন সার্ভিস শিক্ষকরা।
আসলে কী হয়েছিল?
ধরুন সমীর (নাম পরিবর্তিত) নামে এক ব্যক্তি টেট পাশ করে ২০২০ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করলেন। ২০২১ সালের ৬ জুলাই শূন্যপদ বেরল। দেখা গেল ৪ জেলায় শূন্যপদ নেই। ১১ থেকে ১৯ জুলাই চলল কাউন্সেলিং। বীরভূম-সহ এই জেলাগুলোর আবেদনকারীদের পোস্টিং হল ৪০০-৮০০ কিলোমিটার দূরে কোনও স্কুলে। এরপর ৩০ জুলাই ফের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শুরু হল কাউন্সেলিং। ম্যাজিকের মতো ওই ৪ জেলায় চলে এল শূন্যপদ। সবই মানিকের ম্যাজিক।
তদন্তকারীদের হাতে মূলত চারটি বিষয় উঠে এসেছে। আর সেগুলিকে সামনে রেখেই জেরা করা হচ্ছে মানিককে।
১. মানিকের নির্দেশে ইচ্ছে করে শূন্যপদের সঠিক পরিসংখ্যান তুলে ধরেনি পর্ষদ।
২. র্যাঙ্কে পেছনের সারিতে থাকা আবেদনকারীরা ৩০ জুলাইয়ের ম্যাজিকাল শূন্যপদে বাড়ির কাছে পোস্টিং পেয়েছেন।
৩. টাকার বিনিময়ে বাড়ির কাছে পোস্টিং হয়েছে শিক্ষকদের।
৪. বাড়ির কাছে, দূরে। রেট চার্ট আলাদা তৈরি হত।
আপাতত মঙ্গলবারের পর বুধবারও চলছে মানিককে জেরা। আপাতত সিবিআই মানিকের বিরুদ্ধে পোস্টিং-দুর্নীতি ইস্যুতে আরও একটি এফআইআর দায়ের করে তদন্ত চালাচ্ছে।