কলকাতা : আদালত কক্ষে হাত জড় করে পরিবারকে ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ও পুত্র সৌভিক ভট্টাচার্যকে জেল হেফাজতের (Jail Custody) নির্দেশ দিলেন ইডি আদালতের বিচারক। বুধবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল। এদিন মানিকের স্ত্রী ও ছেলে জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন আদালতে। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে। আদালত থেকে বের করে জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁদের। মানিক-পুত্র সৌভিককে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রেসিডেন্সি জেলে। সেখানেই রয়েছেন মানিক। আর মানিকের স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আলিপুর সংশোধনাগারে, যেখানে রয়েছে নিয়োগ মামলার এক অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
মামলার চার্জশিটে নাম থাকায় আদালত সমন করেছিল শতরূপা ও সৌভিককে। আগেই তাঁরা আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন। কিন্তু আগের দিন শুনানি হয়নি। বুধবার ছিল সেই মামলার শুনানি। জামিনের বিরোধিতা করে এদিন ইডি জানায়, মানিকের স্ত্রী পুরো কেলেঙ্কারির কথা জানতেন। স্ত্রী ও পুত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলেও উল্লেখ করেন ইডি-র আইনজীবী। শুধু তাই নয়, আদালতে প্রশ্ন ওঠে মানিকের ছেলে সৌভিক ২০১৭ সালে দুবার ইউকে যাওয়ার কথা কেন লুকিয়ে গিয়েছেন?
এই সব শুনে বিচারক এদিন ইডি-কে প্রশ্ন করেন, এত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেন এতদিন গ্রেফতার করা হয়নি মানিকের স্ত্রী-পুত্রকে। ইডি জানায়, এতদিন গ্রেফতারির প্রয়োজন ছিল না। শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখা হয়। পরে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
উল্লেখ্য, আগেও মানিকের ছেলে সম্পর্কে একাধিক তথ্য় সামনে এনেছিল ইডি। জানা গিয়েছিল, একটি কোম্পানি রয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের নামে। আর তাতে মিলেছিল ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। সেই টাকা দুর্নীতির টাকা বলেই দাবি করা হয়েছিল। এর আগে একাধিকবার তাঁকে তলবও করা হয়েছিল।
মানিকের স্ত্রী-পুত্রের জেল হেফাজত প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘ছোট পরিবার, সুখী পরিবার। এবার সবাই একসঙ্গে থাকবে। এতদিন আলাদা ছিল। মানুষকে যা সাহায্য করেছে, তার ফল তো পেতেই হবে।’