কলকাতা: একুশের বঙ্গযুদ্ধে শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) প্রার্থী তালিকা (TMC Candidate List) প্রকাশিত হওয়ার পরই ক্ষোভ বিক্ষোভে পালা শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে। যারা টিকিট পাননি, তাঁদের কেউ কেউ ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যাদের সে উপায় নেই, তাঁরা প্রকাশ্যেই মুখ খুলছেন দলের বিরুদ্ধে। কেউ বা আবার পথ অবরোধ থেকে শুরু করে কার্যালয়ে আগুন লাগানোর মতো কাজও করছেন। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, যদি ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) সার্ভে সুপারিশ মেনে তালিকা তৈরি করা হত, তবে আরও অনেক রাঘব বোয়াল বাদ পড়তে পারতেন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, পিকে-র সংস্থার পক্ষ থেকে সরেজমিনে সমীক্ষা চালিয়ে যে রিপোর্ট ঘাসফুলের শীর্ষতম নেতৃত্বের কাছে দেওয়া হয়েছিল, তাতে বহু এমন বিধায়ক-মন্ত্রীদের নাম ছিল যারা কালকের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে তালিকাভুক্ত হন ব্রাত্য মন্ত্রী-বিধায়করা। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে পিকে-র পরামর্শ শোনা হলেও সব সুপারিশ মানা হয়নি। তৃণমূল সূত্র এমনটাই জানিয়েছে।
শুধু প্রশান্ত কিশোর নয়, এ বারের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বহু গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সুপারিশই মানা হয়নি বলে সূত্রের দাবি। যেমন এক প্রভাবশালী নেতা যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য এক পুরপিতার নাম সুপারিশ করেছিলেন। ওই কেন্দ্রেই আরেক পুরমাতার নাম সুপারিশ করেন আরেক প্রভাবশালী। কিন্তু, মানা হয়নি কারোর অনুরোধ। বেহালা পূর্ব বিধানসভার জন্যও এক প্রাক্তন মেয়র পরিষদ সদস্যের নাম বহু জায়গা থেকে সুপারিশ করা। কিন্তু তিনিও টিকিট পাননি। সেই জায়গায় রত্না চট্টোপাধ্যায়কেই প্রার্থী করেছেন মমতা।
আরও পড়ুন: ‘আমি পাঁচবারের বিধায়ক, অথচ মিথ্যাচার করে বয়সের দোহাই দিয়ে টিকিটটা দিল না’, বিস্ফোরক জটু
একই ভাবে নলহাটি কেন্দ্রে মইনউদ্দিন শামস যেন এ বারেও টিকিট পান তেমনটাই চেয়েছিলেন এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। মানা হয়নি সেই প্রস্তাবও। তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠনে এখন অন্যতম প্রভাবশালী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েক জন যুব নেতাকে টিকিট দেওয়া নিয়ে জল্পনা ছিল। কিন্তু প্রার্থী তালিকায় তেমন অনেককেই দেখা যায়নি।
তৃণমূলের এক নেতার কথায়, প্রশান্ত কিশোরের ওপর ভরসা থাকলেও পুরোটা আবার তাঁর ওপর ছাড়েননি দলনেত্রী। নিজের মতকে অগ্রাধিকার বহু জায়গায়। সব মিলিয়ে ২০২১-এর চ্যালেঞ্জিং বিধানসভা নির্বাচনে আনুগত্যরও চেয়েও জেতার ক্ষমতা আর পারফর্মেন্সকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন মমতা।
আরও পড়ুন: মুকুলের সঙ্গে কথা, বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন সোনালি গুহ