কলকাতা : করোনার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা রাজ্যে কিছুটা কমেছে। সোমবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজারের কিছু বেশি। কিন্তু, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হওয়ায় স্বাস্থ্য পরিষেবায় সঙ্কট বেড়েই চলেছে। এবার সংক্রমণের কোপ পড়ল বিসি রায় শিশু হাসপাতালে। চিত্তরঞ্জন সেবা সদনের পর শহরের আরও এক শিশু হাসপাতালে ব্যহত পরিষেবা। একাধিক বিভাগ কার্যত বন্ধ করে দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সে কথা জানিয়েও দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবনকে।
হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে এই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ২০। শুধু তাই নয় অন্তত ২০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া একাধিক টেকনিশিয়ানও আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। ফলে পরিষেবায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই সমস্যার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দিয়েছে বিসি রায় শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়েছে যে, সব বিভাগ চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষত ত্বক বা এরকম যে সব বিভাগে একজন বা ২ জন চিকিৎসক রয়েছেন, সেই বিভাগ আপাতত বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। এই হাসপাতালে ৫ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের মধ্যে তিনজনই করোনা আক্রান্ত।
এ দিকে এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ১১ করোনা আক্রান্ত শিশু। তাদের মধ্যে ২ জন শিশুকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছে। ফলে চিকিৎসকের সংখ্যা কমে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে হাসতাপালকে। আপাতত কোনও ক্রমে ওপিডি বা বহির্বিভাগ চালু রাখা হয়েছে হাসপাতালে। তবে অন্যান্য বিভাগে চিকিৎসা কী ভাবে চালানো হবে, তা বুঝে উঠতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
অন্যান্য হাসপাতালের সঙ্গে খুব বেশি তফাৎ নেই। নীলরতন সরকার হাসপাতালেও আক্রান্ত হয়েছেন বহু চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী। শহরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক মানুষ আসেন প্রতিনিয়ত। তাই এই হাসপাতালের পরিষেবা ব্যহত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। অনেককেই হাসপাতালে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে। পেডিয়াট্রিক সার্জারি বা শিশুদের অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত বিভাগও বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
সম্প্রতি আইসিএমআরের নির্দেশিকায় বদল এসেছে কোভিড প্রোটোকলে। বর্তমানে আক্রান্ত হওয়ায় পর পঞ্চম, ষষ্ঠ বা সপ্তম দিনে জ্বর না এলে সাত দিন পেরোলেই শেষ হবে আইসোলেশনের মেয়াদ। এরপর আর আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করার কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দাবি, সাত দিন পেরোলেও অনেকেই কাজে যোগ দিচ্ছেন না কোভিডের অজুহাতে। তাই এবার পরিষেবা সচল রাখতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ, সাত দিন পর কাজে না যোগ দিলে দেখাতে হবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট।
আরও পড়ুন : Suvendu Adhikari: গঙ্গাসাগরের নজরদারি কমিটি থেকে বাদ পড়লেন শুভেন্দু, ‘জয়’ দেখছে রাজ্য