কলকাতা: পরিসংখ্যান বলছে, সারা ভারতবর্ষে মোট হকারের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। কিন্তু, যত সমস্যা কী শুধুই বাংলায়? বেহালার সৌরনীলের মৃত্যুর পর সেই প্রশ্নই নতুন করে উঠতে শুরু করেছে নাগরিক মহলে। টাউন ভেন্ডিং কমিটির তথ্য বলছে, বৃহত্তর কলকাতায় রয়েছেন প্রায় ২ লক্ষ ৭৫ হাজার হকার (Hawkers in Kolkata)। নিউ টাউন, বিধান নগর এবং রাজারহাট নিয়েই বৃহত্তর কলকাতা। গোটা বাংলায় রয়েছে ১৬ লক্ষ হকার। হিসাব বলছে, গত কয়েক বছরে কলকাতার রাস্তায় রেজিস্টার্ড হকারের তুলনায় নথিভুক্তহীন হকারের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েছে। বারবার বলার পরও পুরনিগমের কথা কানেই তোলেননি কলকাতার সিংহভাগ হকার। রাস্তার দখল করে বসা যেন হকাররা অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছেন হকারের একটা বড় অংশ। হকারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে কলকাতা পুলিশ ও পুরনিগমের ভূমিকা।
সূত্রের খবর, টাউন ভেন্ডিং কমিটি সম্প্রতি যে বৈঠক করে সেখানে সিদ্ধান্ত হয় পিচের রাস্তার উপরে কোনও হকার বসতে পারবেন না। কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যালের আশপাশে হকাররা বসতে পারবেন না। ফুটপাতে চলাচলের জায়গা রেখেই তবেই নিজেদের পসরা নিয়ে বসতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু মানছে কে? নজরদারিই বা করছে কে? এই প্রশ্নই এখন ফের নতুন করে উঠতে শুরু করেছে নানা মহল থেকে। কিন্তু, সমাধান কোথায়? মিলছে না সেই উত্তর।
২০১৮ সালে শেষবার টাউন ভেন্ডিং কমিটি তৈরি হয়েছিল। সূত্রের খবর, তারপর থেকে এই টাউন ভেন্ডিং কমিটি আর তৈরি হয়নি। এবার ফের চলতি বছরে তৈরি হয়েছে এক কমিটি। নিয়ম বলছে এই কমিটিতে থাকবে ৫০ শতাংশ হকার প্রতিনিধি, ১০ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি, ৪০ শতাংশ পুলিশ এবং কলকাতা পুরসভার প্রতিনিধি। কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে ১৮। যদিও নিয়ম এটা থাকলেও, আদতে প্রশাসনের লোক ৭০ শতাংশ এই কমিটিতে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। বছর খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টালা সেতু উদ্বোধনে গিয়ে হকারদের যত্রতত্র ফুটপাত দখল এবং প্লাস্টিকের ছাউনি নিয়ে কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের উপরে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এমনকি হকারদের কেন পরিচয়পত্র এখনও তৈরি করা গেল না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। এরপরই মেয়রের নির্দেশে টাউন ভেন্ডিং কমিটির কর্তাদের বৈঠক এবং দ্রুত নির্দিষ্ট নীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মেয়র একাধিক সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু চার বছর পার হলেও সে সবের কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ।