কলকাতা: প্রায় চার মাস। প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে মৃত্যুর পরও যেন ‘রেহাই’ নেই তাঁর। আধুনিকমানের নিকাশি পাম্পিং স্টেশনের উদ্বোধনে এসে রাজ্যের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
প্রসঙ্গত, টালিগঞ্জ এবং বাঁশদ্রোণীর ১১১-১১৪ নম্বর ওয়ার্ড যাদবপুর বিধানসভার মধ্যে ছিল। ডিলিমিটেশনের পর এই ওয়ার্ডগুলি টালিগঞ্জ বিধানসভার মধ্যে আসে। বর্তমানে টালিগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস। ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কেইআইআইপি প্রকল্পের অন্তর্গত নিকাশি পাম্পিং স্টেশনের উদ্বোধনে এসে কটাক্ষ করলেন অরূপ।
রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, “এই এলাকার বিধায়ক ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি বর্তমানে প্রয়াত। কিন্তু কীভাবে তিনি ভোটে জিতেছেন, তা এখন বলতে পারব না। ১০ হাজার, ১৫ হাজার, ২০ হাজার ভোট পেতেন এই ওয়ার্ডগুলি থেকে। মানুষ ভোট দিতেন নাকি অন্যভাবে ভোট হত তা আমি এখন বলতে পারব না।” থামেননি এখানেও। আরও বললেন, “তবে ভোটে জেতার পরেও এই এলাকায় নিকাশি পরিকাঠামো কিছুই গড়ে তোলা হয়নি। এমনকী এই এলাকার মানুষ মিষ্টি জল এখনো পান না। এলাকায় কোনও পরিষেবা গড়ে তোলা হয়নি। তাহলে বুদ্ধদেব বাবু করলেন কি?” রীতিমত কটাক্ষের সুর ছুঁড়ে দেওয়া হয় বামেদের দিকে।
পাশাপাশি বর্তমানে দক্ষিণ শহরতলির এই ওয়ার্ড গুলিতে যে উন্নয়ন হচ্ছে, তার পেছনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড়সড় অবদান রয়েছে বলেই তিনি দাবি করেন। মন্ত্রীর কথায়,”এই পাম্পিং স্টেশনের জন্য ৫০০ কোটি টাকা মুখ্যমন্ত্রী বরাদ্দ করেছিলেন। আরও বেশ কয়েকটি পাম্পিং স্টেশনের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভা দ্রুত তৎপরতায় এই কাজ করছে।”
এ দিন, ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে যে নিকাশি পাম্পিং স্টেশনটি উদ্বোধন করা হয়। সেটি দিয়ে এই ওয়ার্ডের প্রায় ৯৫ শতাংশের বেশি এলাকার জল নিষ্কাশিত হবে কেওড়াপুকুর খালে। এলাকার জল দ্রুত নামবে বলে দাবি করেন রাজ্যের মন্ত্রী। মোট ন’টি পাম্প রয়েছে এই স্টেশনে। যার মধ্যে পাঁচটি চালু হবে বৃষ্টির সময়। বাকি চারটি নিত্যদিনের নিকাশির জল নিষ্কাশনে ব্যবহার করা হবে।
এছাড়াও এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, “আগামী এক বছরের মধ্যে ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিবেকানন্দ পল্লীতে আরও একটি নিকাশি পাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে। কেইআইআইপি প্রকল্পের অধীনে এই পাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হবে। যেটা দিয়ে ১১১, ১১২, ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরো এবং ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাকি অংশের জল নিষ্কাশিত হবে। এছাড়াও কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের অধীনে আরো একটি পাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হবে। পাশাপাশি গার্ডের নিজ জল প্রকল্প থেকে এলাকায় জল সরবরাহ বৃদ্ধি করার জন্য বেশ কয়েকটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেগুলির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে মন্ত্রী দাবি করেন। বর্তমানে যে কয়েকটি পানীয় জল প্রকল্প রয়েছে, তা দিয়ে কাজ চালানো সম্ভবপর হচ্ছে না বলেই মন্ত্রী জানান।
লোকসংখ্যা যেভাবে বেড়েছে ওয়ার্ড গুলিতে, তাতে মিস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির প্রকল্প দ্রুত গতিতে শেষ করা হবে বলেই মন্ত্রীর দাবি।