কলকাতা: বয়স মোটে ৪ বছর। কিন্তু, হলে কী হবে, এখন সে ভুগছে দুরারোগ্য ব্যাধিতে। ওই একরত্তির দেহে বাসা বেধেছে মারণ কর্কট। আয়ু খুব বেশি নেই। চিকিত্সকেরা স্পষ্টই জানিয়েছেন, কোটি টাকার ওষুধ না দিলে রোগমুক্তি হবে না। রক্তে সেঁধিয়েছে ক্যানসারের মারণ বীজ। নাম রূপন চক্রবর্তী। নদিয়া মদনপুরের বাসিন্দা সে। বাবা সামান্য কর্মী। মা গৃহবধূ। উপার্জন যত্সামান্য। এত টাকা জোগান দেবে কে? পাশে দাঁড়ালেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)।
নিজের জন্মদিনেই সংবাদমাধ্যমের সামনে ওই বালক ও তার পরিবারকে এনে সরাসরি আবেদন করেন তৃণমূল বিধায়ক। হাতজোড় করে বলেন, “আমি মদন মিত্র হয়েই বলছি, এই ছোট ছেলেটির পাশে দাঁড়ান। ওর পরিবারের পাশে দাঁড়ান। আমি আমার একমাসের বেতন দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর দরবার থেকেও সাহায্য এসেছে। কিন্তু, সেটুকু ওর চিকিত্সার জন্য যথেষ্ট নয়। আরও টাকা দরকার। আপনাদের সকলের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ ওর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সবাই মিলে সাহায্য করলে আমরা ছেলেটিকে ফিরিয়ে আনতে পারব।”
ঠিক কীরকম খরচ রূপনের চিকিত্সায়? সেকথাও সবিস্তারে জানিয়েছেন বিধায়ক। জানিয়েছেন, রূপনের একটি ওষুধের দাম ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। আমেরিকা থেকে সে ওষুধ আনা হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। সেই ওষুধ দিতে ৫৬ দিন সময় লাগবে। ২৮ দিন করে দুই দফায় মোট ওষুধের খরচ পড়বে। সঙ্গে রয়েছে বেডের খরচ। যা প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। তারপর বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে, যেখানে সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ৩৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু, সামান্য দর্জির সেলাইয়ের কাজ করা পারিমতা ও শাড়ির দোকানের কর্মচারী রাকেশ তাঁদের ছেলের জন্য এতটাকা পাবেন কী করে? তাই সব মানুষকে সাহায্য করার জন্য আবেদন করেন মদন।
এদিন, বিধায়কের জন্মদিনও ছিল। সেই উপলক্ষ্যে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে একটি কবিগুরুর গানে ও কবিতায় একটি অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানের পরেই রূপন ও তাঁর পরিবারকে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিয়ে আসেন তিনি। দেওয়া হয় যোগাযোগের নম্বর ও ব্যাঙ্কের তথ্য়ও। বিধায়কের এমন সাহায্য পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত রাকেশ-পারমিতা। অন্তত ছেলের চিকিত্সা হলেই হল। এটুকুই চান তাঁরা। পাশাপাশি মদন মিত্রকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তাঁরা।
অন্যদিকে, এদিন কামারহাটি তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গোটা এলাকা বেলুন ও বিধায়কের ছবি দিয়ে সাজানো হয়। এলাকার সকল মানুষকে নিমন্ত্রণ মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়। খাওয়ানো হয় বিরিয়ানি। গোটা কামারহাটি এলাকার প্রায় ৬ হাজার মানুষ এদিন এই উদযাপনে অংশ নেন। সারাদিন চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। এদিন দুপুরে দেখা যায়, লাইন দিয়ে সারি বেঁধে খেতে বসেছেন এলাকাবাসী।
এদিন, কামারহাটি ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব প্রেসিডেন্ট বলেন, “মানুষের কাছে যেমন দুর্গাপুজো, কালীপুজো, আমাদের কাছে তেমনই দাদার জন্মদিন। দাদা আমাদের মসীহা। আমাদের গুরুদেব। তিনি সকলের কাছের মানুষ। তাঁর জন্মদিন তাই আমাদরে কাছে উত্সবের মতো। আমরা, এই দিনটাকে তাই এরকম আনন্দ করেই পালন করি। আজ এলাকার সকল মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছি আমরা। আজ কারোর বাড়িতে রান্না হবে না। সকলে আজ এখানেই খাওয়া দাওয়া করবেন। দাদা আমাদের গুরু। দাদাই সব। ওঁর জন্যই এত আয়োজন।”
বিশেষ দ্রষ্টব্য
(রূপনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বরটি দেওয়া হল। শুভানুধ্যায়ী ও আগ্রহীরা যোগাযোগ করতে পারেন। যোগাযোগ: ৯৩৩২৬৬৭৪১৮
ACCOUNT NO. : 31073940686
IFSC CODE: SBIN0010539
STATE BANK OF INDIA
RAKESH CHAKRABARTY)