Connman Arrested: টাকা লুট করে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেন ডেবিট কার্ড, ১৩ রাজ্যে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধীকে পাকড়াও করল বিধাননগর পুলিশ
Most Wanted Connman Arrested: পুলিশ সূত্রে খবর, মূলত বড় শহরে ঘুরতে যাওয়ার নাম করে হোটেল ভাড়া নিতেন অভিযুক্ত। সেখানেই কোনও একটি ডরমেটারি জাতীয় রুম নিয়ে চলত প্রতারণা চক্র। হোটেলে আগতদের মধ্য়ে থেকেই কারওর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেন তিনি। তারপর মাঝরাতে বন্ধুর সর্বস্ব নিয়ে পালিয়ে যেতেন বলেই অভিযোগ। গোটা প্রতারণা চক্রে, সেই 'বন্ধুর' ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ল্যাপটপ ও মোবাইলকেই টার্গেট করত অভিযুক্ত।

কলকাতা: যাঁকে খুঁজতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে গিয়েছিল ১৩টি রাজ্য়ের পুলিশ। একজন অভিযুক্তকে পাকড়াও করতে ‘দল বাঁধতে’ হয়েছিল তাঁদের। হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ খুলে চলছিল ২৪ ঘণ্টা নজরদারি। কিন্তু তাও হাতে আসছিল না সেই অভিযুক্ত। অবশেষে অসাধ্য সাধন বিধাননগর পুলিশের। রবিবার রাতে ১৩ রাজ্যের পুলিশকে হন্যি করা ‘ঠগবাজকে’ গ্রেফতার করল বিধাননগর পুলিশ। এই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধীর কিন্তু একটি বিশেষ চরিত্র রয়েছে। তিন লুট করেন। একজন সর্বস্রান্ত করে দেন। টাকাও নিয়ে নেন। তারপর লুট করা অন্যান্য সামগ্রী, যেমন ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, তা আবার ফেরতও পাঠিয়ে দেন।
কীভাবে তৈরি অপরাধ চক্র?
অভিযুক্ত দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা। পুলিশের ধারণা সম্ভবত বেঙ্গালুরু বাসিন্দা সে। সেখানে তাঁর বাড়িতেও গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু বাবা-মায়ের সঙ্গে এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই তাঁর। ছেলে অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তেই তাঁকে ত্যাজ্যপুত্র করছেন অভিভাবক। তাই বাড়ি ছেড়ে অভিযুক্ত ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন রাজ্যে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মূলত বড় শহরে ঘুরতে যাওয়ার নাম করে হোটেল ভাড়া নিতেন অভিযুক্ত। সেখানেই কোনও একটি ডরমেটারি জাতীয় রুম নিয়ে চলত প্রতারণা চক্র। হোটেলে আগতদের মধ্য়ে থেকেই কারওর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেন তিনি। তারপর মাঝরাতে বন্ধুর সর্বস্ব নিয়ে পালিয়ে যেতেন বলেই অভিযোগ। গোটা প্রতারণা চক্রে, সেই ‘বন্ধুর’ ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ল্যাপটপ ও মোবাইলকেই টার্গেট করত অভিযুক্ত। তারপর হোটেল থেকে পালিয়ে ক্রেডিট কার্ড থেকে দামি জিনিসপত্র কেনে, ডেবিট কার্ড থেকে টাকা তুলে নেয়। অবশ্য, অপারেশন শেষ হলেই আবার সেই ‘বন্ধুর’ ঠিকানায় ল্যাপটপ, মোবাইল সব স্পিড পোস্টে পাঠিয়ে দেয় সে।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই প্রতারিতদের টাকাতেই সম্প্রতি ১৫টি দামি মডেলের আইফোন কিনেছেন অভিযুক্ত। যার বাজারদর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। এছাড়াও, গ্রেফতারির পর অভিযুক্তের থেকে একাধিক আধার কার্ড, চল্লিশটি সিম ও একাধিক ডিজিটাল ডিভাইস উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কীভাবে হল গ্রেফতারি?
একজন অভিযুক্ত গোটা দেশের পুলিশের কাছে মাথাব্যথার কারণ। যাঁকে ধরতে গিয়ে হিমশিম খেতে হল তাঁদের। সেই ‘দাগী আসামীকে’ কীভাবে গ্রেফতার করল বিধাননগর থানার পুলিশ? অনেকদিন ধরেই এই অভিযুক্তকে ধাওয়া করছিল পুলিশ। লোকেশন জানা গেলেও ঘটনাস্থলে গেলেই হাওয়া হয়ে যায় অভিযুক্ত। পিছু নিয়েও লাভ হচ্ছিল না বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে কৌশলে বদল আনেন তদন্তকারীরা। তারপরই রবিবার রাতে মেলে অভিযুক্তে ‘কারেন্ট লোকেশন’। এরপরই রাতের বিমানে চেপে কেরলের দিকে রওনা দেন বিধাননগর পুলিশের একটি বিশেষ দল। পাঁচ বছরের তল্লাশির পর অবশেষে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় তাঁকে।
