Moynaguri Minor Harassment: ‘সিবিআই তদন্ত চাই না’ বলতে আদালতে ময়নাগুড়ির নির্যাতিতার বাবা, চেম্বারে নিয়ে গেলেন প্রধান বিচারপতি

TV9 Bangla Digital | Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

May 05, 2022 | 2:42 PM

Moynaguri Minor Harassment: নির্যাতিতার বাবা এ দিন প্রথমবার হাইকোর্টে আসেন। তাঁর দাবি, অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাই সিবিআই তদন্ত আর চান না তাঁরা।

Moynaguri Minor Harassment: সিবিআই তদন্ত চাই না বলতে আদালতে ময়নাগুড়ির নির্যাতিতার বাবা, চেম্বারে নিয়ে গেলেন প্রধান বিচারপতি
কলকাতা হাইকোর্ট। ফাইল ছবি

Follow Us

কলকাতা: ময়নাগুড়িতে নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা ও তার মৃত্যুর মামলায় নয়া মোড়। আদালতে এসে নির্যাতিতার বাবা বললেন, ‘সিবিআই তদন্ত চাই না।’ তাঁর এই আর্জিতে আপত্তি জানান মামলাকারীর আইনজীবী। চাপে পড়ে এই দাবি করছেন বলে অভিযোগ আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তের। বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি আলাদাভাবে নিজের চেম্বারে ডেকে নিয়ে গিয়ে কথা বলেন নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে। নির্যাতিতার বাবার বক্তব্য এ দিন পেন ড্রাইভের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি এলাকার প্রভাবশালী নেতাদের নাম উল্লেখ করেছেন বলে সূত্রের খবর। তবে কেন্দ্রীয় সংস্থার হস্তক্ষেপ চাইছেন না তিনি।

ময়নাগুড়ি-কাণ্ডে রিপোর্ট জমা রাজ্যের

অন্যান্য ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে ময়নাগুড়ি নিয়েও আগেই মামলা হয়েছে আদালতে। পরে নাবালিকার মৃত্যুর পর সিবিআই তদন্তের আর্জি নিয়ে ফের আবেদন করেছিলেন মামলাকারী। তাঁদের অভিযোগ, মূল অভিযুক্ত পকসো কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছে। তারপর নির্যাতিতার বাড়িতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা গিয়ে ভয় দেখায়। ২৫ এপ্রিল নির্যাতিতার মৃত্যু হয়। পুলিশের গাফিলতি স্পষ্ট বলে দাবি করেন মামলাকারীরা। শাসক দলের সঙ্গে অভিযুক্তের যোগও পাওয়া গিয়েছে। এ দিন ময়নাগুড়ি-কাণ্ডে রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্য।

‘কতটা চাপ থাকলে বাবা ময়নাগুড়ি থেকে আসেন!’

জোর করে নির্যাতিতার বাবাকে সিজার লিস্টে জোর করে সই করানো হয়েছে বলেও দাবি করেন আইনজীবী সুস্মিতা সাহা। তিনি বলেন, ‘কতটা চাপ থাকলে বাবা ময়নাগুড়ি থেকে আসেন সিবিআই দেবেন না এটা বলতে!’ তিনি জানান, ভিডিয়ো ক্লিপে বাবা সিবিআই চাইছেন বলে জানিয়েছেন। সেটা জমাও দেওয়া হয়েছে আদালতে। পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

‘সিবিআই সম্পর্কে কোনও ধারনাই ছিল না’

নির্যাতিতার বাবা সিবিআই তদন্তে না করায়, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব তাঁকে নিজের চেম্বারে নিয়ে যান। তিনি বাংলা বোঝেন না বলে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ প্রশ্ন করেন ওই ব্যক্তিকে। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, খুব সীমিত সময় কথা হয়েছে নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে। যেহেতু বাবা নিজেই সিবিআই-তে আপত্তি জানিয়েছেন, তাই প্রশ্ন ওঠে কোনও চাপ কাজ করেছে কি না। নির্যাতিতার বাবা বিচারপতিদের জানিয়েছেন নির্যাতিতা হাসপাতালে থাকাকালীন আসামীদের শাস্তি চেয়েছিল। সিবিআই কি সেটা সম্পর্কে তাঁর স্পষ্ট ধারনা নেই বলেও উল্লেখ করেছেন নাবালিকার বাবা। সাধারণ গ্রামবাসীদের কাছে এর অর্থ বুঝেছেন। তাঁর দাবি, যেহেতু পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করেছে তাই সিবিআই চান না তিনি।

কিশোর দত্তের মতো একজন আইনজীবী…!

নির্যাতিতার বাবার পক্ষে হাইকোর্টে সওয়াল করেন রাজ্যের প্রাক্তন এজি কিশোর দত্ত। এ দিন তিনি দাবি করেন, শুধু রাজনীতি করা হচ্ছে। স্বচ্ছ তদন্ত হোক। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহার দাবি, নির্যাতিতার বাবা হাইকোর্টে প্রথম এলেন। তাঁর যা আর্থ-সামাজিক অবস্থা তাতে কিশোর দত্তের মতো একজন বিশিষ্ট আইনজীবীকে কীভাবে মামলার দায়িত্ব দিলেন? সেই প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী। তাঁর জাবি, কেউ এটা করিয়েছে। হাই পাওয়ার কমিটি বা অবসরপ্রাপ্ত মহিলা বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করার আর্জি জানান তিনি।

ক্রমাগত ঘটে চলা একের পর এক ঘটনা দেখে আপাতত অভিজ্ঞ ( সিনিয়র) আইপিএস দিয়েই ময়নাগুড়ির ঘটনার তদন্ত করা হোক, এমনটাই জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চের। ডিজি ও আইজিপি নিরাপত্তার জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন বলে জানিয়েছে আদালত। আগামী সপ্তাহের বুধবার পরবর্তী শুনানি।

কী সেই মামলা?

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির ধর্মপুরে এক নাবালিকাকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় বাসিন্দা অজয় রায় নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করার পর অভিযুক্ত গা ঢাকা দেন। এরপর আদালতে আগাম জামিন নেন অভিযুক্ত। পরে নাবালিকার বাড়িতে চড়াও হন দুই যুবক। নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেন তাঁরা। অভিযোগ না তুলে নিলে পুরো পরিবারকে খুন করা হবে, এমন হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নাবালিকা। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। মূল অভিযুক্ত বিজয় রায় ও অজয় রায়কে গ্রেফতার করার পর তাঁরা নিজেরাই জানিয়েছিলেন যে তাঁরা তৃণমূল করেন।

Next Article