কলকাতা : হরিদেবপুর, বেলঘরিয়ার সঙ্গে কাঁটায় কাঁটায় টক্কর দিয়েছে গার্ডেনরিচ। কোনও রহস্য রোমাঞ্চ চলচ্চিত্রের থেকে কোনও অংশে কম নয় সেই দৃশ্য। গার্ডেনরিচের ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। খাটের নীচে থরে থরে জমিয়ে রাখা ছিল নগদ টাকা। ই নাগেট নামে এক অনলাইন মোবাইল গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে চলত লোক ঠকানোর কারবার। সেই সূত্র ধরেই ইডি অভিযান চালিয়ে এই বিপুল অঙ্কের টাকা উদ্ধার করেছে। এই টাকার পাহাড় কীভাবে জমানো হয়েছিল? সেই তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক মিউল অ্যাকাউন্ট বা ভাড়ার অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ, যারা এই প্রতারণা চক্রের মাথা, তারা বেশ কিছু সাধারণ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া করে এই লেনদেন করেছে। কখনও হিমাচল প্রদেশ বা কখনও অন্য কোনও জায়গার মানুষের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে চলত এই প্রতারণার কারবার। এক্ষেত্রে মিউল অ্যাকাউন্ট বা ভাড়া করা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির আসল গ্রাহকদের থেকে কিছু শর্তের বিনিময়ে ব্যবহার করা হত। অ্যাকাউন্টের সব লেনদেন করত এই প্রতারণা চক্রের মাথারাই। এর বিনিময়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের আসল গ্রাহকদের একটি নির্দিষ্ট অংশের টাকা দেওয়া হত।
এদিকে ইডির সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের রাজারহাট শাখার একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত গেমিং অ্যাপের টাকা। এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ওই ব্যাঙ্কের দাবি, বেশ কিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন হচ্ছিল। সূত্রের খবর, এক একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে দিনে ৫০-৭৫ হাজার বার লেনদেন হত। এমন অস্বাভাবিক লেনদেন দেখে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানায়।
উল্লেখ্য, এই মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমেই প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়েছিল। প্রথমে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য অ্যাপের ওয়ালেট থেকে টাকা তোলার অপশন দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তারপর হঠাৎই সিস্টেম আপগ্রেডেশনের নামে টাকা তোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকী অ্যাপ থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল ব্যবহারকারীদের পুরনো প্রোফাইলও।