কলকাতা: জেহাদ বরদাস্ত করা হবে না। পুর ভোটে বরদাস্ত করা হবে না গা জোয়ারি। কলকাতার দলীয় কর্মীদের বিজয়া সম্মিলনীতে এই বার্তাই স্পষ্ট করললেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আর এভাবেই কার্যত
কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস । বিজয়া সম্মিলনীর মোড়কে উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘ওয়ার্ম আপ’ সমাবেশ করল কলকাতা তৃণমূল ।
রবিবার ভবানীপুরের তেরাপন্থ সভাগৃহে দক্ষিণ কলকতা তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে সুব্রত বক্সি বলেন, ” রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকবেই, কিন্তু শেষমেশ ওয়ার্ডে যাকে টিকিট দেওয়া হবে, তার জন্যই সবাইকে একজোট হয়ে লড়তে হবে । কোন জেহাদ বরদাস্ত করা হবে না। ” দলের রাজ্য সভাপতির এই বক্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মানছে রাজনৈতিক মহল।
দক্ষিণে যখন নেতৃত্বের তরফে এই বার্তা , ঠিক তখনই উত্তরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষরা বলেন ” কোনও গা জোয়ারি বরদাস্ত করা হবে না। দুটো ভোট বেশি পেতে গিয়ে গন্ডগোল করা যাবে না। ”
এর আগেও বিভিন্ন পুর ভোটে গোলমালের খবর শিরোনামে উঠেছে । ঠিক এই কারণেই ২০২১ এ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুরভোট না করার সপক্ষে তৃণমূল দলের অন্দরে এই মত ছিল জোরাল, যে পুর ভোটে কোনও গোলমাল হলে তার খেসারত দিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর নিজের নির্বাচনে।
সামনেই কলকাতা এবং হাওড়ায় নির্বাচন এই ঘটনা এড়াতে চাইছে তৃণমূল। এদিন উত্তরের বিজয়া সম্মিলনীতে কুণাল ঘোষ বলেন “৫০০ ভোট বেশি পেতে গোলমাল করবেন না। বদলে এখন থেকেই জন সংযোগ বাড়ান। আপনার বিপক্ষ গোষ্ঠীর সঙ্গে বসুন। ”
রাজ্যে পুরভোটের (Municipal ELection) তোড়জোড় শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। আগামী মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বরের ১৯ তারিখে কলকাতা (Kolkata) ও হাওড়া (Howrah) পুরনিগমের জন্য ভোট করতে চেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের সেই আর্জি মেনে নিয়েছে কমিশন। সব ঠিক থাকলে আগামী মাসেই হচ্ছে পুরভোট। প্রস্তুতি শুরু করে দিল কমিশনও।
সদ্য নির্বাচনি আবহের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে রাজ্য। প্রথমে বিধানসভা নির্বাচন ও পরে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের উপ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে ফের ভোটের দামাম বেজেছে রাজ্যে। রাজনৈতিক দলগুলিও প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ইতিমধ্যে। এরই মধ্যে তৎপর হল কমিশনও। কলকাতা ও হাওড়ার পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, ইভিএমেই হবে ভোট। তার জন্য আধিকারিকদের কী ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, সেই বিষয়েও আলোচনা হবে ওই বৈঠকে। এ ছাড়া ভোট কবে ঘোষণা করা হবে, সেই বিষয়টাও বৈঠকে উঠে আসতে পারে বলে সূত্রের খবর। সম্ভবত চলতি মাসের ২৫ তারিখে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে।
যদিও বিজেপি চায় ভোট পিছিয়ে দেওয়া হোক। তাদের দাবি, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে সমস্ত পুরসভার নির্বাচন একসঙ্গে হোক। ২০১১ সালে তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডে যে ভাবে নিরপেক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন করেছিলেন, ঠিক সেই ভাবেই নির্বাচন যাতে হয়, আদালতে সেই আর্জিই জানাবে বিজেপি। শুরু হয়েছে মামলার প্রস্তুতি। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেন রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে জনস্বার্থ মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। বিজেপির দাবি, হাওড়া ও কলকাতায় বিজেপি কিছুটা দুর্বল বলেই এই জায়গায় আগে ভোট করতে চাইছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: Sukanta Majumder: ‘বিজেপির এত দুরবস্থা হয়নি যে ১ লাখ টাকায় টিকিট বিক্রি হবে!’