কলকাতা: পুজোর পর থেকে বাংলায় আবারও ঊর্ধ্বমুখী করোনার (Covid-19) গ্রাফ। সংক্রমণে রাশ টানতে ফের নাইট কার্ফুতে কড়াকড়ির নির্দেশ নবান্নের। সোমবার রাতে শহরে বাড়ল কলকাতা পুলিশের তৎপরতা। প্রগতি ময়দান থানার সামনে ও শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় গুলিতে রাত এগারোটার পর থেকে নাকা চেকিং চালায় কলকাতা পুলিশের কর্তারা।
সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কী কারণে কার্ফু চলাকালীন গাড়ি রাস্তায় তা জানতে চাওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেকটি গাড়িতে যথোপযুক্ত বৈধ নথি রয়েছে কি না —তাও খতিয়ে দেখে পুলিশ। উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে বা কথাবার্তায় সন্দেহজনক মনে হল কিংবা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মাস্ক না পরে রাস্তায় কেউ বেরোলে আইনি পদক্ষেপেও করা হচ্ছে পুলিশের তরফে। সোমবার রাতে একাধিক বাইক আটক করে পুলিশ।
পুজো মিটতেই ফের করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে এ রাজ্যে। কলকাতায় সংক্রমণের চিত্রটা রীতিমতো উদ্বেগের। কোনও ভাবেই করোনা বিধিকে অমান্য করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন। সরকারি নির্দেশ মানতেই হবে। তবু সে সবের তোয়াক্কা না করেই অনেকে মাস্ক না পরে বেরিয়ে পড়ছেন রাস্তায়। মানছেন না নাইট কার্ফুর বিধি নিষেধও।
সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮০৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এর মধ্যে কলকাতায় সংক্রমিত হয়েছেন ২২৯ জন। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। রাজ্যে পজিটিভিটি রেট ২.৭৭ শতাংশ। সংক্রমণের গতি রুখতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে কনটেইনমেন্ট জোন। তবে কলকাতায় এখনই কনটেইনমেন্ট জোন চাইছে না কলকাতা পুরসভা। আপাতত মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন করে নোটিস ইস্যু করা হবে।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এখনই কনটেইনমেন্ট জোন আমরা করছি না। কলকাতায় বেশিরভাগেরই ভ্যাকসিনেশন হয়ে গেছে। তাই করোনা হলেও আতঙ্ক কম। মানুষকে সচেতন করতে আমরা ছোট ছোট মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন করে নোটিস দিচ্ছি। পাশাপাশি আমরা কলকাতা পুরসভার তরফে এলাকায় জোরদার প্রচার শুরু করছি। কলকাতা পুলিশকে আমি কড়াভাবে নির্দেশ দিচ্ছি, মানুষ যাতে মাস্ক পরে এবং যতটা ভিড় এড়িয়ে চলা সম্ভব, তার জন্য পুলিশ প্রশাসন যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।”
অন্যদিকে শনিবার এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কলকাতার আশেপাশের জেলাগুলি থেকে অনেকে নিজেদের ঠিকানা দিচ্ছেন কলকাতা হিসাবে। কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি ল্যাবে এই পরীক্ষাগুলি হয়েছে। পরে আক্রান্ত বা তাদের পরিবারকে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে আসল ঠিকানা যাচাই করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা নিয়মিত এই প্রক্রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা জানাই এবং এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ। আমরা কেবল চূড়ান্ত পরিসংখ্যানই ঘোষণা করি। আমরা জানি না যে এর মধ্যে কোন কর্তৃপক্ষ বা কেউ কী পরিসংখ্যান দেখিয়েছে বা কোথা থেকে তা এসেছে, তা আমাদের জানার বাইরে।” প্রসঙ্গত সম্প্রতি কোভিড আক্রান্তের পরিসংখ্যান নিয়ে কলকাতা পুরসভার তথ্য ও স্বাস্থ্য দফতরের তথ্যের মধ্যে ফারাক লক্ষ্য করা যায়। যা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: মহানগরে লম্ফঝম্প করোনার, একদিনেই আক্রান্ত ২২৯! রাজ্যে ৮০০ পার