কলকাতা: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ। এক জায়গায় যখন অধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে সমান্তরালভাবে দ্বিধাবিভক্ত দুই ছাত্র দল। তখন অন্যদিকে, উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনতে গিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে সরব দুই ছাত্র দল। এক্ষেত্রেও অবশ্য দুই ছাত্র দলই নিজেদের শাসকদলের সমর্থক বলেই দাবি করেছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন ছাত্রনেতা মনবুর আলি উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে উপাধ্যক্ষের বদল চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে নালিশ ঠুকলেন ছাত্র নেতা। এমএসভিপি’র বিরুদ্ধে বেনিয়মের একগুচ্ছ নথি পেশ করেছেন তিনি। আবার সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মনবুরের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে পাশ করানো, অর্থাৎ তোলাবাজির অভিযোগ তুলে সরব জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। মনবুরের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন মনবুর আলি। পাল্টা এমএসভিপি’র বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ মনবুরের। তাঁর দাবি, উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। মানহানির মামলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মনবুর।
টিএমসিপি নেতা মনবুরের অভিযোগ, এমএসভিপির পূর্ণাঙ্গ সময় হাসপাতালে থাকেন না। এমএসভিপি পোস্ট নন, প্র্যাক্টিসিং পোস্ট হওয়া সত্ত্বেও কেন উপাধ্যক্ষ বেসরকারি হাসপাতালে বেশি সময় কাটান? মনবুর উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের ঘরে নিকুর এসি ব্যবহার, নার্সিংহোমের রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির অভিযোগ তুলেছেন।
উপাধ্যক্ষের পাশাপাশি সিএনএমসি’র নন মেডিক্যাল ডেপুটি সুপার অভিষেক দে’র বিরুদ্ধেও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন মনবুর।
সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে নিতাই রায় নামে এক ছাত্রের বক্তব্যকে সামনে এনেছিল মনবুরের বিরোধী শিবির। মনবুরের বিরুদ্ধে সেই বক্তব্য থেকে সরে এসেছেন সেই নিতাই। এবার তাঁর দাবি, চাপ দিয়ে তাঁকে মনবুরের বিরুদ্ধে বলানো হয়েছে।
অন্যদিকে, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষের বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ কেউ প্রমাণ করতে পারলে, তিনি চাকরি ছেড়ে দেবেন।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক অশান্তি হয়। যা রীতিমতো হাসপাতাল চত্বরে কলতলার ঝগড়ায় পরিণত হয়। অভিযোগ স্বীকার-অস্বীকার। বিবৃতি পাল্টা বিবৃতি যেমন রয়েছে, তেমনিই অভিযুক্ত আর অভিযোগকারী— দু’পক্ষই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। প্রশ্ন হল, এই লড়াইয়ে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের পদ কেন কলুষিত হচ্ছে! কেনই বা কলুষিত হচ্ছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্র। হাসপাতাল যদি এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকে। তাহলে রোগীদের পরিষেবা দেবেন কে?