কলকাতা: ভঙড়ে মৌনী মিছিল রয়েছে তৃণমূলের। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মাঝেই তৃণমূল নেতা সওকত মোল্লার নেতৃত্বে আয়োজিত এই কর্মসূচির তীব্র নিন্দা করলেন আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি। তাঁর বক্তব্য, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব সর্বোপরি পুলিশ কীভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অনুমতি দিল? পাশাপাশি বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে নওসাদ এও আভাস দিলেন, যে ফুরফুরা শরিফের সঙ্গে তৃণমূলের লড়াইয়ের সূচনা করে দিচ্ছেন সওকতই। ভাঙড়ে তৃণমূলের হাল ফেরাতে সেখানে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় সওকত মোল্লার উপর। গত রবিবার রাতে ফুরফুরা শরিফে গিয়ে চোর চোর স্লোগানের মুখে পড়তে হয়েছিল সওকত মোল্লাকে। অভিযোগ, তিনি যখন ত্বহা সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করে ফুরফুরা মাজার শরিফ এলাকায় ঘুরছিলেন, তখন একদল লোক তাঁকে দেখে চোর চোর বলে চেঁচিয়ে ওঠেন। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই ভাঙড়ে মিছিলের ডাক দেন সওকত। সেই প্রসঙ্গে নওসাদ বলেন, “এটাই কি নব্য তৃণমূলের পরিচয়? ভাঙড়ের ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিচ্ছে? তাদের কি ডিস্টার্ব করা হবে না? নাকি ভাঙড়ের ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দেয় না? ভাঙড়কে কুলুসিত করার জন্য সব সময়েই কিছু রাজনীতির কারবারিরা চেষ্টা চালান। ভাঙড়কে শিরোনামে আনতে চান।”
আলোচনা প্রসঙ্গে নওসাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব তুলে ধরেন। সওকতের হাত ধরেই কি ফুরফুরা শরিফ বনাম তৃণমূলের একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে? যাতে কিছুটা অনুঘটকের কাজ করেছে হুগলির ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা সাফেরি সিদ্দিকির নয়া অভিযোগ। তাঁর অভিযোগ, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা ফোনে তাঁকে খুনের হুমকি দিয়েছেন।
গোটা পরিস্থিতিতে উদ্ভূত রাজনৈতিক সমীকরণ প্রসঙ্গে এদিন নওসাদ বলেন, “হুগলির ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা সাফেরি সিদ্দিকি একজন সমাজ সচেতক মানুষ। তিনি কিন্তু কোনও দলের হয়ে ব্যাটিং করেননি। সওকত সাহেব যে কাজটা করছেন, তৃণমূল ভার্সেস ফুরফুরা শরিফের যে লড়াইটা শুরু হতে চলেছে, এটা তিনি সূচনা করে দিয়েছেন। এটা সামলাতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। এটা সওকত সাহেবের সঙ্গে ফুরফুরা শরিফের সমস্যা নাকি তৃণমূলের সঙ্গে ফুরফুরা শরিফের সমস্যা? এটাই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তৃণমূলকে।”
পাশাপাশি কাইজার-সওকত সমীকরণ প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন নওসাদ। তিনি বলেন, “মুখ ও মুখোস তো তাদের মধ্যে রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা আগে একটা কথা বলছে, তারপর অন্য কথা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকবে কিনা, সেটা অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।” সওকতকে ভাঙড়ের ‘অবজার্ভার’ হিসাবে মানতেই নারাজ ছিলেন কাইজার। তিনি দাবি করেছিলেন, ভাঙড়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে সওকতকে। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে চর্চা হতেই রাতারাতি ভোল বদলান তিনি। সেই বিষয়টিকেই কটাক্ষ করেন নওসাদ। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দেন, “সাফিরি সিদ্দিকি আমার তুতো ভাই। তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। নির্দিষ্ট পন্থা মেনে এফআইআর করে আইনের দ্বারস্থ হব।”