কলকাতা: দেখতে আর পাঁচটা সাধারণ হোটেলের মতো। কাঠের টেবিল। কাঠের চেয়ার। কিন্তু, হোটেলে ঢুকলেই এক অন্য অনুভূতি। মনে হবে ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছেন। হোটেলের দেওয়ালে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি টাঙানো। কোথাও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, কোথাও অরবিন্দ ঘোষ। শুধু ছবিই নয়, এই হোটেলেই একসময় পাত পেড়ে খেয়েছেন নেতাজি। সেই হোটেলে বসে খাওয়ার অনুভূতি। আর সেই অনুভূতি পেতে যেতে হবে কলেজ স্ট্রিটের স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেলে।
স্বাধীনতার আগে অবশ্য এই হোটেলের নাম ছিল হিন্দু হোটেল। ১০০ বছরের বেশি পুরনো এই হোটেলের ঠিকানা ৮/২ ভবানী দত্ত লেন, কলকাতা ৭৩। ওড়িশার কটক থেকে চাকরির খোঁজে কলকাতায় আসা মনগোবিন্দ পণ্ডা নামে এক যুবক এই হোটেল খুলেছিলেন। ১৯১১ সালে কলকাতা আসেন তিনি। বছরখানেক চাকরির চেষ্টার পর হোটেলটি খোলেন। একসময় এই হোটেলে খেতে আসতেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। হোটেলের পাশে প্রেসিডেন্সি কলেজ(তৎকালীন হিন্দু কলেজ)-র ছাত্র ছিলেন নেতাজি। পুঁই চচ্চড়ির টানে তিনি ঢুঁ মারতেন এই হোটেলে। কলেজের পাট চোকানোর পরও নাকি ওই পুঁই চচ্চড়ির টানে হোটেলে আসতেন নেতাজি। সেই পদ এই হোটেলে আজও ‘হিট’। শুধু সেই পুঁই চচ্চড়ির স্বাদ নিতে আজও অনেকে ওই হোটেলে যান।
মনগোবিন্দ পণ্ডার পর তাঁর ভাই প্রহ্লাদ পণ্ডা হোটেলের দায়িত্ব নেন। তাঁর প্রয়াণের পর তাঁরই বংশধর এখন হোটেল চালান। সময় বদলালেও হোটেলের সেই ঐতিহ্য আজও একই রয়েছে। ঘানির সর্ষের তেল, বাটা মশলা ব্যবহার করা হয় রান্নায়। ইতিহাস, ঐতিহ্যের টানেই আজও মানুষ ছুটে আসেন এই হোটেলে। ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসে উৎসব হয় হোটেলে।
শুধু নেতাজি নন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, অরবিন্দ ঘোষের পা পড়েছে এই হোটেলে। তাই শুধু খাওয়ার জন্য নয়। ঐতিহ্য, ইতিহাসের ছোঁয়া পেতেও অনেকে যান এই হোটেলে।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)