কলকাতা : স্নাতকের পঠন পাঠনের ক্ষেত্রে বদলে যাচ্ছে নিয়ম। এবার আর তিন বছরে নয়, পড়ুয়ারা স্নাতক হবেন চার বছরে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নয়া নিয়ম চালু হচ্ছে রাজ্যে। জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে রাজ্যের আপত্তি থাকলেও, রাজ্যের পড়ুয়ারা যাতে কোনও অংশে পিছিয়ে না পড়েন, সে কথা মাথায় রেখেই এই নিয়ম চালু করা হচ্ছে। বুধবার শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে এই নিয়মের কথা জানানো হয়েছে। তিন বছরের বদলে চার বছর ধরে চলবে স্নাতকের পাঠ। চার বছর পর সরাসরি গবেষণায় অংশ নিতে পারবেন পড়ুয়ারা।
শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সব সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজে এই নীতি কার্যকর হবে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকেই কার্যকর হচ্ছে এই নতুন নিয়ম। অর্থাৎ এবছর যে সব পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন, তাঁরা এই নয়া নীতির আওতায় পড়বেন। জাতীয় শিক্ষানীতিতেও এই ৪ বছরের স্নাতক কোর্সের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেই একই পদ্ধতি চালু করা হলেও, শিক্ষানীতি নিয়ে কেন আপত্তি, সেই প্রশ্ন সামনে আসছে।
তবে কেন্দ্রীয়ভাবে কলেজে ভর্তির যে প্রক্রিয়া চালু করার কথা ছিল, তা আপাতত করা হচ্ছে না। প্রতিটি কলেজে আলাদাভাবে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া চালু থাকবে। অর্থাৎ পুরনো নিয়মেই ভর্তি হতে পারবেন পড়ুয়ারা।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, “এই বছর স্নাতকস্তরে ভর্তি হতে চলেছেন রাজ্যের প্রায় ৭ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। তাঁদের সুবিধার কথা ভেবে স্নাতকস্তরে আমরা ৪ বছরের পঠনপাঠন চালু করতে চলেছি। এতে তাঁদের সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে এবং একইসঙ্গে রাজ্যের বাইরে পড়তে যাওয়ার প্রবণতা কমবে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায়, সে কারণেই আপাতত কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে না। মন্ত্রী বলেন, “প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এবং পরিমার্জনের কাজ আমরা জরুরি ভিত্তিতে চালাব, যাতে সম্ভব হলে এই ব্যবস্থাটিকেও আমরা এই বছরই চালু করতে পারি।”
শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায়ের দাবি, এই নীতিকে তিনি সমর্থন করেন তবে কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে। তিনি বলেন, “এই চার বছরের কোর্সে পাঠ্যক্রম এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে ছাত্র বা ছাত্রীরা কলেজের পাঠ শেষ করার পর সরাসরি কলেজে পড়াতে পারেন।” পাশাপাশি পরিকাঠামোর উন্নয়ন দরকার বলেও মনে করেন তিনি। শিক্ষাবিদের মতে, বর্তমানে যে পরিকাঠামো আছে তাতে চার বছরের কোর্স চালানো সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর দক্ষতা আছে, এমন অধ্যাপক কলেজে নিয়োগ করতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।