কলকাতা: পাহাড় থেকে সাগর, পার্কস্ট্রিট থেকে আলিপুর চিড়িয়াখানা—-বর্ষববরণে রাজ্যজুড়ে কেবল উদযাপনের ছবি। সঙ্গে জনজোয়ার। থিকথিকে ভিড়ে পাল্লা দিয়ে বাড়ল সংক্রমণও (COVID19)। কিন্ত, কার তাতে কী ! কোভিড-কাঁটাকে উপেক্ষা করেই চলল জমায়েত। এতটাই, যে ২০২১-এর সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেল ২০২২।
জনজমায়েতে রেকর্ড গড়ল ইকো পার্ক!
বাইশ সালের ১ জানুয়ারিতে সর্বাধিক জনসমাগমের রেকর্ড গড়ল নিউটাউন ইকোপার্ক। ওইদিন ইকোপার্কে মোট ৭৫ হাজার ৯৭৫ জনের পা পড়েছিল। ২০২১-এর ৩১ ডিসেম্বর সেই সংখ্যাটা ছিল ২১ হাজার। গত ২৫ ডিসেম্বর ৬০ হাজার ২৮২ জন জমায়েত হন ইকোপার্কে। জনসমাগমে পিছিয়ে নেই আলিপুর চিড়িয়াখানা, সায়েন্স সিটি বা অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলি। কলকাতার বুকে এই বিশাল জনজোয়ারে রেকর্ড সংক্রমণ বৃদ্ধি হয়েছে করোনারও।
কেবল, ইকো পার্কই নয়, পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২-এ রেকর্ড জমায়েত দেখা দিয়েছে চিড়িয়াখানাতেও। ২০২১-এর ১ জানুয়ারি চিড়িয়াখানায় ভিড় জমিয়েছিলেন ৫১ হাজার মানুষ। ঠিক ৩৬৫ দিন পর, ফের ১ জানুয়ারি এই সংখ্যাটাই হয়েছে ৫৩ হাজার মানুষ। কিছুদিন আগেই পশু-পাখি দেখতে ৭০ হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন।
এছাড়াও জাদুঘর, সায়েন্স সিটি নিকোপার্ক মিলিয়ে অন্তত প্রায় ৫০ হাজারের অধিক মানুষের ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছে। তার চেয়েও বড় কথা, এই জমায়েতে দেখা গিয়েছে অধিকাংশই করোনা-বিধি মানতে অপারগ। কারোর মুখে মাস্ক নেই, কারোর মাস্ক ঝুলছে নাকের তলায় কেউ বা হাতে রেখেছেন মাস্ক। কেন মাস্ক নেই মুখে? প্রশ্ন করতেই কেউ বলছেন, ব্যাগে রয়েছে মাস্ক, কেউ বা বলছেন দমবন্ধ লাগছে। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা দেখে এড়িয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ।
বাংলায় করোনাগ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের শনিবারের করোনা বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষ। সবথেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি কলকাতায়। শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে শনিবার সকাল ৯ টার মধ্যে কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৯৮ জন। স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উল্লেখ্য, কত নমুনা পাঠানো হচ্ছে আর কত নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভ হয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার দেখা গিয়েছে, ৬টি নমুনা পাঠানোর পর ৫ টি পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তা থেকে কলকাতায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত স্পষ্ট বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ধীরে ধীরে সরিয়ে ওমিক্রন তার থাবা বসাচ্ছে। কলকাতায় টেস্ট ও পজিটিভিটি রেটও সমান হারে বাড়ছে।
ফের আংশিক লকডাউনের পথে যেতে পারে রাজ্য। মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন তৈরির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে কলকাতা পুরনিগমে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, যদি একটি ফ্ল্যাটে ৫ জন করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে ওই আবাসনকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ওই আবাসনের লিফট স্যানিটাইজ করতে হবে। আবাসনের সুইমিং পুল, জিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত এরকম ১১ টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: Weather Update: বছর শুরুর সঙ্গী রবিবাসরীয় রোদ, দিনভর হিমেল আমেজেও থমকে পারদপতন..কী বলছেন আবহবিদরা?