কলকাতা: অনুপ্রবেশ রুখতে হবে। উস্কানিতে পা দেওয়া চলবে না। প্ররোচনার ফাঁদে পড়ে মাথা গরম করা চলবে না। মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। বলছেন বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সর্বময়কর্তা তথা স্পেশ্যাল ডিজি রবি গান্ধী। তাঁর মতে, ফ্রন্টিয়ারের গোয়েন্দা শাখাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। গ্রামগুলির ভেতরে নিজেদের সোর্স আরও বৃদ্ধি করতে হবে। সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলির মধ্যে বিএসএফের বিভিন্ন কাজের সীমা আরও বাড়াতে হবে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের কর্তাদের এ ভাষাতেই স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শের পাশাপাশি সর্বদা সতর্ক থাকারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্পেশ্যাল ডিজির তরফে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই এবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হল। তারপরই এসে গিয়েছে একগুচ্ছ নির্দেশ। অনুপ্রবেশের সময় সশস্ত্র হামলা হলে জওয়ানরা যেন পাল্টা গুলি চালাতে পিছপা না হন। দেশ রক্ষায় কোনওরকম আপস নয়। এমনকি, কোনও বিএসএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে যদি ভারতের ভূখণ্ড রক্ষায় সামান্যতম গাফিলতি দেখা যায়, তাহলে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ করারও বার্তা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারত-বাংলাদেশ মোট সীমান্ত রয়েছে ৪০৯৬ কিলোমিটার। মোট ছয়টি ফ্রন্টিয়ার এই সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্ব রয়েছে দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার, উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার, গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ার, মিজোরাম-কাছার ফ্রন্টিয়ার, মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার, ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ার, অসম ফ্রন্টিয়ারের কাঁধে। সদ্য ছ’টি ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল এবং ডিআইজিদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইস্টার্ন কমান্ডের স্পেশ্যাল ডিজি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তরফে একাধিক নির্দেশ ইতিমধ্যেই পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডে এসেছে।
বিএসএফ সূত্রে খবর, সীমান্তে কাঁটাতার সমস্যা থেকেও এখন চিন্তা বেশি ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকা দালালদের নিয়ে। কারণ অরক্ষিত অংশ দিয়ে এই ভারতীয় দালালরাই অনুপ্রবেশকারীদের সহজেই অন্ধকার-কুয়াশার মধ্যে দিয়ে ভারতে ঢুকতে সাহায্য করছে। ইতিমধ্যেই গত ১০ দিনে ইস্টার্ন কমান্ডের বিভিন্ন ফ্রন্টিয়ারের অধীনস্থ এলাকায় অন্তত ১৪টি বর্ডার আউট পোস্ট এলাকায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। প্রায় পঞ্চাশের উপরে অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়েছে। কিন্তু, সীমান্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার সুযোগ নিয়ে কোচবিহার এবং ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ারের অংশ দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা সবথেকে বেশি হচ্ছে! তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা। তবে বিএসএফ সূত্রে খবর, এ রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠে এসেছে বৈঠকে।