Covid Vaccine: পুজোর চারদিন কলকাতায় বন্ধ টিকাকরণ, জানাল পুরসভা
KMC: ৮ অক্টোবর শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে কোভিড বুলেটিন প্রকাশ করেছে, সেখানে একদিনে আক্রান্তের উল্লেখ রয়েছে ৭৮৪ জন।
কলকাতা: পুজোর চারদিন শহরে বন্ধ থাকছে করোনার টিকাকরণ। পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, ১২ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ কলকাতার যাঁরা বাসিন্দা, তাঁরা পুজোর চারদিন টিকা পাবেন না।
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেন, “করোনা মোকাবিলা সকলের সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়েই করতে হবে। টিকাকরণ করোনা মোকাবিলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সেই কাজটা যদি বন্ধ রাখা হয়, তাও চারদিন টানা তা হলে তো সমস্যা হতেই পারে। আমরা বলছি যত কম সময়ের মধ্যে সম্ভব মানুষকে টিকা দিতে। অথচ চারদিন ধরে কলকাতা শহরে টিকাকরণ বন্ধ থাকবে। অথচ অন্যান্য কাজ হবে, সেটা না হলেই ভাল হয়। আমাদের লক্ষ্য যত বেশি সংখ্যক মানুষের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা যায়।”
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুয়ারে। দ্বিতীয়া বা তৃতীয়াতেই যে ভিড় শহরের পুজো মণ্ডপগুলিতে দেখা গিয়েছে, তাতে বলা ভাল উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। যেহেতু সপ্তাহান্তে অর্থাৎ শনি-রবি চতুর্থী ও পঞ্চমী। তাই উৎসবমুখর বাঙালি আর সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীর জন্য অপেক্ষা করতে চাইছে না। অন্তত তৃতীয়ার ঢল সে কথাই বুঝিয়ে দিয়েছে।
এদিকে এই বিপুল জমায়েতের ভিড়ে চুপি চুপি বেড়ে চলেছে করোনার সংক্রমণও। কলকাতা তো বটেই, শহরতলী ও জেলাতেও ক্রমশই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ৮ অক্টোবর শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে কোভিড বুলেটিন প্রকাশ করেছে, সেখানে একদিনে আক্রান্তের উল্লেখ রয়েছে ৭৮৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। কলকাতাতেই আক্রান্ত ১৫৮ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২৮ জন। এরপরই রয়েছে হাওড়ার নাম। একদিনে ৬৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন এই জেলায়।
এদিকে পুজোর কয়েকদিন যে হারে মানুষের ভিড় বাড়বে তাতে এই সংক্রমণটা যে আরও অনেকটাই ঊর্ধ্বমুখী হবে, তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। এরই মধ্যে পুজোর চারদিন করোনার টিকা দেওয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। যদিও তারা বলছে পুজোয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে বিপদ অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।
মুখে মাস্ক অত্যাবশ্যক। শারীরিক দূরত্বও রাখা দরকার। রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর এই পুজো উপলক্ষে বিশেষ সতর্কবার্তাও জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে করোনা এখনও সক্রিয়। ভাইরাসের গঠনগত বদলের কারণে যে কোনও সময়ই এই সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের ঝুঁকি থেকেও মুক্ত নই আমরা। তাই শারদীয়ায় কোনও রকম জমায়েত না করাই ভাল। বাজার, দোকান, রেস্তোরাঁয় শারীরিক দূরত্ব অবশ্যই মেনে চলতে হবে। দল বেঁধে সিঁদুর খেলা নয়।
বার বার সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে। কাশি, জ্বর বা সর্দি হলে ঘরের বাইরে না বেরোনোই ভাল। পুজোর কাজে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে, যাঁদের টিকার ডবল ডোজ় নেওয়া রয়েছে, তাঁরাই এগিয়ে আসলে ভাল হয়। অর্থাৎ এই সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকা যে কতটা জোরাল হাতিয়ার, তা স্বাস্থ্য দফতরের সতর্কবার্তাতেও স্পষ্ট।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশব্যাপী টিকাকরণ অভিযানের অঙ্গ হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে বিনামূল্যে কোভিড টিকা সরবরাহ করে আসছে। কেন্দ্রীয় সরকার টিকা উৎপাদক সংস্থাগুলির কাছ থেকে সংগৃহীত টিকার ৭৫ শতাংশই রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে সরবরাহ করছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এখনও পর্যন্ত ৯৪ কোটি ৮৬ লক্ষ ৫২ হাজার ৬০৫টি টিকার ডোজ় সরবরাহ করা হয়েছে। এমনকী রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কাছে টিকাকরণের জন্য ৮ কোটি ২২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫১০টি ডোজ় হাতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: TMC VS Congress: জোর তরজা হাত-ঘাসফুলে! এবার তৃণমূলের নিশানায় ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী