কলকাতা: এসএসসি (SSC) তদন্তে সিবিআই তদন্তে প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। কলকাতায় নেমেই বাঁশদ্রোণীর সিল ফ্ল্যাটে পৌঁছন তিনি। এরপর নিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারান তিনি। বলেন, ‘তাঁর আমলে কোনও দুর্নীতি হয়নি। প্রক্রিয়াগত ত্রুটি থাকতে পারে।’
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বুধবার সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা। তবে গতকাল কাউকে না পেয়ে ফ্ল্যাট সিল করে দেন তাঁরা। এরপর আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তড়িতড়ি শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা পৌঁছন সস্ত্রীক উপাচার্য। বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাটে পৌঁছিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কালকে আমার অফিসে গিয়েছিল। ওরা কী পেয়েছে ওদের জিজ্ঞাসা করুন। আমার সিবিআই-এর উপরে একশো শতাংশ ভরসা আছে। সঠিক পথেই ওরা এগোচ্ছে।’ এরপর তিনি দাবি করে বলেন, ‘বাগ কমিটির রিপোর্টে আমার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু স্ক্যান সাক্ষর নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। হাজার-হাজার মার্কশিট সব স্ক্যান সাক্ষরে হয়। এই সাক্ষর যদি কেউ ব্যবহার পরবর্তীতে সেটা আলাদা ব্যাপার।’
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য অতীতে এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই সূত্র ধরেই বুধবার সকালে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য শিলিগুড়িতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। শুধু উপাচার্যের বাসভবনেই নয়, অভিযান চালানো হয় উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের দফতরেও।
উল্লেখ্য, বস্তুত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ায় সুবীরেশ ভট্টাচার্যর।তিনি ৪ বছরের বেশি স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে প্রাক্তন বিচারপতি আর কে বাগের কমিটির দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়, ৩৮১টি ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে। তার মধ্যে ২২২ জন পরীক্ষাই দেননি বলে অভিযোগ। বাগ কমিটির সেই রিপোর্টেও উল্লেখ ছিল সুবীরেশের নাম। সেই সময় উপাচার্য জানিয়েছিলেন, ‘চেয়ারম্যান থাকাকালে কোনও আপস করিনি। আগের নিয়মেই আমার সময়কালে প্রার্থী শুধু নিজের র্যাঙ্ক দেখবেন এই পদ্ধতি চালু করেছিলাম। কাউন্সেলিংয়ের সময় সবার ব়্যাঙ্ক টাঙানো হত। ২০১৮ সালের জুলাই পর্যন্ত আমি চেয়ারম্যান ছিলাম। তখন দুর্নীতি হয়নি।’
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দুই প্রাক্তন কর্তা বর্তমানে জেলে। এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় গোন্দাদের র্যাডারে এখন উপাচার্য।