Ranaghat Ashmika: আজ ‘১৬ কোটির জীবন’ ফিরে পাচ্ছে ছোট্ট অস্মিকা, বাঁচার লড়াইয়ে উত্তরসূরি হৃদিকাও
Ranaghat Ashmika: এগারো মাস আগে মেয়ের রোগের চিকিৎসার খরচ জেনে মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে অস্মিকার বাবা-মায়ের। হাল ছাড়েননি। শুরু হয় টাকা জোগাড়ের লড়াই। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মঞ্চকে ব্যবহার করে মেয়েকে বাঁচানোর আর্তি জানান অস্মিকার বাবা-মা।

কলকাতা: বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুর অভিভাবকদের আশার আলো দেখাচ্ছে রানাঘাটের ১৬ মাসের শিশু অদ্রিকা দাস। স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত এই শিশুর জিন থেরাপির জন্য প্রয়োজন ছিল ১৬ কোটি টাকা। এগারো মাস আগে মেয়ের রোগের চিকিৎসার খরচ জেনে মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে অস্মিকার বাবা-মায়ের। হাল ছাড়েননি। শুরু হয় টাকা জোগাড়ের লড়াই। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মঞ্চকে ব্যবহার করে মেয়েকে বাঁচানোর আর্তি জানান অস্মিকার বাবা-মা।
সেই আবেদনে দেশ-বিদেশের মানুষ ১৬ মাসের ফুটফুটে শিশু কন্যার পাশে এসে দাঁড়ায়। সেই অর্থেই বুধবার জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন পেল অস্মিকা। এই মুহূর্ত শুধু অস্মিকার বাবা-মা’র মুখে হাসি ফোটায়নি। অস্মিকাদের লড়াইয়ের প্রাণশক্তিও বটে। তাই অস্মিকার ওষুধ প্রাপ্তির দিন সোনারপুরের হৃদিকা দাসের অভিভাবকেরাও আসেন এদিন পঞ্চসায়রের বেসরকারি হাসপাতালে। অস্মিকার মতো হৃদিতার মায়েরও কাতর আর্জি, ‘পাশে দাঁড়ান প্লিজ’।
অস্মিকার বাবা বলেন, “আমার মেয়ের যখন ৬ মাস বয়স, তখন রোগটা ধরে পড়ে। ইঞ্জেকশনের জন্য একমাত্র উপায় ছিল ক্রাউড ফান্ডিং। লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে কনটেন্ট ক্রিয়েটার, সবাইকে আবেদন করেছিলাম। সবার আর্শীবাদে আজ এই দিনটা দেখতে পাচ্ছি। এরকম বিরল রোগে আক্রান্ত বাচ্চাগুলোকে যাতে সরকার সাহায্য করে, তাহলে সত্যিই গরিব মানুষগুলো উপকৃত হবে। ”
স্পাইনাল মাসকুলার অট্রোফি একটা জেনেটিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হয় অস্মিকা। এই রোগ মূলত জিনগতভাবে হয়। নার্ভ ও পেশীকে এফেক্ট করে। হাতপায়ের নার্ভ ও পেশী শিথিল হতে থাকে। দু’বছরের নীচের বাচ্চাদের জন্য লাইসেন্সড রয়েছে এই ইঞ্জেকশনের।
অস্মিকার চিকিৎসক সংযুক্তা দে বলেন, “আগে এই ধরনের শিশুদের রোগের ডিটেকশনই হত না। আস্তে আস্তে নম্বর অফ ডিটেকশন বেড়েছে। আমরা আরও অস্মিকাকে পাচ্ছি। তিন ধরনের ওষুধ রয়েছে। জিন থেরাপি এককালীনই দিতে হয়। এই ওষুধগুলো যখন আমরা বাইরে থেকে আনানো শুরু করেছি, তখন রেয়ার ডিসিস পলিসি ছিল না। এই পলিসি হওয়ার পরে কিছু পোর্টালের মাধ্যমে ওরাল মেডিসিন পেয়েছি। কিন্তু খুবই অল্প সংখ্যক। সবই ব্যয়বহুল। সরকারি-বেসরকারি ফান্ডিংয়ের প্রয়োজন। ভারতে যদি তৈরি করা যায়, তার প্রচেষ্টা একান্ত জরুরি।”
আশায় বুক বাঁধছেন সোনারপুরের হৃদিকা দাসের মা। তিনি বললেন, “আমার মেয়েও টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত। আমার মেয়েকেও ভেন্টিলেশনে দিতে হয়েছিল। অস্মিকার বাবাকে দেখেও আমরা লড়াই করার সাহস পাচ্ছি। আমাদের এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা উঠেছে। মোট ৯ কোটি টাকা দরকার। এককালীন। ওর এখন ১৪ মাস বয়স, হাতে আর ৬-৭ মাস রয়েছে। “
