কলকাতা: ব্যাঙ্ক কর্মীদের ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ। আর সেই টাকাতেই আবার নিজের কোটি টাকার ফ্ল্যাট বানানোর অভিযোগ। বিতর্কে তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। আর যে কোম্পানিকে ঘিরে এত শোরগোল, তার নাম ‘সেভেন সেন্সেস কোম্পানি’। এই কোম্পানি সম্পর্কে ছানবিন করতে গিয়েই TV9 বাংলার হাতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে তৈরি হয়েছিল ‘সেভেন সেন্সেস’ কোম্পানিটি। সেটি মূলত ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ কোম্পানি হিসাবেই তৈরি হয়েছিল। ২০১৪ সালে অন্যতম ডিরেক্টর হিসাবে সেই কোম্পানিতেই যোগ দিয়েছিলেন নুসরত। ২০১৭ সালে পদত্যাগও করেন। তারই মধ্যে প্রতারণার অভিযোগ। অর্থাৎ সাংসদ হিসাবে শপথগ্রহণের আগেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগটি ওঠে।
উল্লেখ্য, এই সংস্থা কলকাতাতে ব্যবসা করলেও, নথিভুক্ত ঠিকানা ভুবনেশ্বরে। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, রাকেশ সিংয়ের কলকাতার বুকেই আরও চারটে কোম্পানি রয়েছে। আর সেই চারটে কোম্পানিকে কাজে লাগিয়েই রাকেশ প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
জানা যাচ্ছে, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের কর্মীদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, গড়িয়াহাট এলাকায় একটি আবাসন তৈরি করে তাঁদের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। সেই ভিত্তিতেই সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মীরা দিয়েছিলেন। একটি কো-অপারেটিভ তৈরি করেই টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গোটা প্রক্রিয়া যখন দেরি হতে শুরু করে, তখন কয়েকজন ব্যাঙ্ক কর্মী বিষয়টি নিয়ে তদ্বির করা শুরু করেন। তখন তাঁদের বলা হয়, গড়িয়াহাটে ঠিক ওই মাপের জমি পাওয়া যাচ্ছে না। হিডকোতে জমি দেওয়া হবে। তাতে ফ্ল্যাটের আয়তনও বড় হবে। দু’কামরা বিশিষ্ট ফ্ল্যাটের বদলে তিন কামরার ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু এত বছরেও তাঁরা ফ্ল্যাট পাননি।
প্রতারিতরা প্রথমেই গড়িয়াহাট থানার দ্বারস্থ হন। কিন্তু অভিযোগ, সে সময়ে থানা অভিযোগ নিতে চাননি। আদালতের নির্দেশে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) গড়িয়াহাট থানাকে দিয়ে আর্থিক প্রতারণার মামলার প্রাথমিক অনুসন্ধান করান। সেসময়ে অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে। রিপোর্ট জমা পড়ে আদালতে।
অর্থাৎ নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত ছিল কলকাতা পুলিশ। একই অভিযোগে দুষ্ট রাকেশ সিংকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও তিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত। কিন্তু গ্রেফতার করা হয়নি নুসরতকে।