কলকাতা : রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ওড়িশা থেকে এক ব্যক্তি রাজ্যে এসেছেন। ওই ব্যক্তি ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে গতরাতে জানিয়েছে ওড়িশা। তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পেট্রোপোল সীমান্ত থেকে আরও দুই যাত্রীর শরীরে ওমিক্রনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ফলে রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১৯। বঙ্গে ওমিক্রনের অ্যাকটিভ কেস বর্তমানে ১৬। এ ছাড়া আরও পাঁচ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তির শরীরে ডেল্টার হদিশ মিলেছে।
রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, ঠিক একইভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণ গ্রাফও। বুধবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজারের গণ্ডি পার করেছিল। বৃহস্পতিবার ২ হাজার পার করে সেই সংখ্যা। শুক্রে তা প্রায় সাড়ে তিন হাজার ছুঁই ছুঁই। শনিবার ফের লম্বা লাফ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের শনিবারের করোনা বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষ।
সবথেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি কলকাতায়। শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে শনিবার সকাল ৯ টার মধ্যে কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৯৮ জন। স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উল্লেখ্য, কত নমুনা পাঠানো হচ্ছে আর কত নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভ হয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার দেখা গিয়েছে, ৬টি নমুনা পাঠানোর পর ৫ টি পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তা থেকে কলকাতায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত স্পষ্ট বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ধীরে ধীরে সরিয়ে ওমিক্রন তার থাবা বসাচ্ছে। কলকাতায় টেস্ট ও পজিটিভিটি রেটও সমান হারে বাড়ছে।
শুক্রবার বৈঠকে বসে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন তৈরির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে কলকাতা পুরনিগমে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, যদি একটি ফ্ল্যাটে ৫ জন করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে ওই আবাসনকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ওই আবাসনের লিফট স্যানিটাইজ করতে হবে। আবাসনের সুইমিং পুল, জিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত এরকম ১১ টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে ৩ জানুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে স্টুডেন্টস উইক উপলক্ষে রাজ্য সরকারের তরফে এক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও থাকার কথা ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই কর্মসূচি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তাহলে কি ফের আংশিক লকডাউনের পথে হাঁটার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার? এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে বিভিন্ন মহলে।
সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে ফের একবার আংশিক লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে রাজ্য। জারি হতে পারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবারও বিধিনিষেধ। এদিকে শনিবারই এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সোমবার থেকে কলকাতা হাইকোর্টের সব মামলার শুনানি ভার্চুয়ালি হবে।
আরও পড়ুন : COVID cases in Delhi: হলুদ সতর্কতা জারি, তবু রাজধানীতে লম্বা লাফ করোনার; দ্বিগুণ বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ