কলকাতা : রাজ্যে বাড়ছে ওমিক্রনের আতঙ্ক। করোনায় আক্রান্ত আরও এক। এবার সংক্রমিত হয়েছেন এক জুনিয়র চিকিৎসকও। জানা গিয়েছে নদিয়ার বাসিন্দা ওই ওমিক্রন আক্রান্ত কলকাতা মেডিকেলের কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক। সম্প্রতি কোনও বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাসও নেই তাঁর। বিদেশ যোগ না থাকলেও ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার খোঁজ রাজ্যে এই প্রথম। ফলে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্যের। রাজ্যে ওমিক্রনের গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। ওমিক্রনের গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে কলকাতার কারও কোভিড পজিটিভ হলেই আক্রান্তের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তাতেই ওমিক্রন ধরা পড়েছে ওই জুনিয়র চিকিৎসকের। আক্রান্তকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে।
কোনওরকম বিদেশ যাত্রার সাম্প্রতিক ইতিহাস ছাড়াই জুনিয়র চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ায় বুস্টার ডোজের জন্য আরও জোরালো সওয়াল উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। চিকিৎসক বিদেশে যাননি, কোভিড হাসপাতালের ইন্টার্ন তিনি। তাহলে কি কোনও রোগীর সংস্পর্শে এসে ওমিক্রন পজিটিভ হয়েছেন তিনি? এমন প্রশ্নও উঁকি মারতে শুরু করেছে।
একদিকে ক্রিসমাস কার্নিভাল, বর্ষবরণের সপ্তাহে উৎসব মুখর বাঙালি। অন্যদিকে গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিতকে জোরালো করে ওমিক্রন পজিটিভ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসক। উল্লেখ্য, শহরে আজ আরও এক ব্যক্তির শরীরে ওমিক্রনের খোঁজ মিলেছে। ২৭ বছরের ওই যুবক ডাবলিনে কাজ করেন। গত পাঁচ বছর ধরে আয়ারল্যান্ডে থাকছিলেন তিনি। গত শুক্রবার কলকাতায় আসেন। ম্যানচেস্টার থেকে আবু ধাবি ও দিল্লি হয়ে কলকাতায় ফেরেন তিনি। শুক্রবার তাঁর জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের রিপোর্টে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
ওমিক্রনের কথা ভেবে চিন্তিত রাজ্য ও কেন্দ্র। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ দেশের সাধারণ নাগরিকদের ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এখন না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে কোভিড -১৯-উপযুক্ত আচরণবিধি মেনে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জোর দিয়েছেন দ্রুত টিকাকরণের উপরেও।
এদিকে করোনা পরীক্ষায় দেশের মধ্যে পিছনের সারিতে রয়েছে রাজ্য। প্রতি ১০ লক্ষে কতজনের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, সেই হিসেব করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, গত দু’সপ্তাহ ধরে পশ্চিমবঙ্গ একেবারে পিছনের সারিতে রয়েছে। সবচেয়ে কম টেস্ট হয়েছে যে পাঁচটি রাজ্যে, পশ্চিমবঙ্গ তার মধ্যে অন্যতম। দেশের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৮৯ শতাংশ করোনা টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন এবং প্রায় ৬১ শতাংশ মানুষ কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজের নিরিখে প্রথম পাঁচেও নেই বাংলা। বাংলা রয়েছে একাদশ স্থানে।