কলকাতা : রাজ্যে অসহ্য গরমের বলি আরও এক। রমজান মাস চলছে। কয়েকদিন পরেই ঈদ। কিন্তু এবারের ঈদ আর দেখা হল না অনিশার। তপসিয়া ফার্স্ট লেনের বাসিন্দা অনিশা আফরিন মণ্ডল (১৮)। স্বপ্ন ছিল আকাশে ওড়ার, এয়ার হোস্টেস হওয়ার স্বপ্ন দেখত। কিন্তু এই দাবদাহে তাঁর সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার। মায়ের সঙ্গে ঈদের বাজার করতে গিয়েছিলেন রবিবার নিউ মার্কেটে। এরপর বাড়ি ফেরার পরেও সব ঠিক ছিল। কিন্তু সন্ধ্যা থেকেই হঠাৎ অসুস্থতা। বাড়িতে ডাক্তারও এসেছিলেন। তিনি অনিশাকে দেখে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সময় পাওয়া গেল না। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ঈদে নতুন জামাকাপড় কিনবে বলে মাকে নিয়ে বাজার ছুটেছিল অনিশা। কিন্তু এই গরমে সেদিন ছাতা নিতে ভুল হয়ে গিয়েছিল। আর সেই আক্ষেপই এখন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে অনিশার মাকে। অনিশার বাবা আশরাফ আলি একটি মুদি দোকান চালান। দুই মেয়ে তাঁদের। অনিশা ছোট মেয়ে। স্বল্প আয়েই দুই মেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। মেয়েদের নিয়ে অনেক গর্ব ছিল বাবা-মায়ের। বিয়ে নয় বরং মেয়েদের স্বপ্নপূরণ করতে চেয়েছিলেন বাবা। কিন্তু এক লহমায় সব কিছু বদলে গেল। গ্রীষ্মের এই দাবদাহে ছোট মেয়েকে হারিয়েছেন তাঁরা। ঈদের আগেই অন্ধকার নেমে এসেছে তাঁদের জীবনে। ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সবাই। এখন বড় মেয়েকে আকড়েই বাকি জীবন বাঁচতে চান। অনিশার বাবার আশা, এখন বড় মেয়েই পূরণ করবে ছোট মেয়ের স্বপ্নও।
উল্লেখ্য, এর আগে হাওড়াতেও এই প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক প্রৌঢ়। বাসু মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি হাওড়ার শানপুর এলাকায় টোটো চালান। প্রতিদিনের মতো সোমবারও টোটো নিয়ে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু এই প্রচণ্ড রোদে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে নৈহাটিতেও এক জুট মিল শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।