কলকাতা: আর জি করে চিকিৎসক পড়ুয়াদের আন্দোলন অব্যাহত। পুজোয় যখন শহরের একটা বড় অংশের মানুষ প্য়ান্ডেল হপিংয়ে ব্যস্ত, তখন আর জি করে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা। আজ অষ্টমীতে দশম দিনে পড়ল আর জি করের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে চলা পড়ুয়াদের অনশন।
আজ রাধা গোবিন্দ করের মূর্তিতে মাল্যদানের পর প্রতীকী অঞ্জলি দেওয়ার পর ক্য়াম্পাসজুড়ে অনশনরত পড়ুয়াদের স্ট্রেচারে শুইয়ে মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলে স্লোগানে, গানে, প্ল্যাকার্ড হাতে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আবারও সরব হন পড়ুয়ারা। এখনও পর্যন্ত ৯ জন অনশনে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শেখ রাজকুমার নামে এক পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
পড়ুয়াদের অনশন চলাকালীন অধ্যক্ষ যেভাবে কলেজ ছেড়ে চলে যান, তা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের মধ্যে। যদিও এই নিয়ে দুই পক্ষের দুই রকম বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের বক্তব্য যেভাবে সারা রাত আটকে রাখা হয়েছিল অধ্যক্ষকে। তারপর সকাল হতে তিনি বেরিয়ে যান। তারপর যেভাবে পড়ুয়াদের একাংশ অধ্যক্ষকে পিছনে তাড়া করেছিল, তারও নিন্দা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশ। অন্যদিকে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বক্তব্য, অধ্যক্ষ যেভাবে অনশনের মাঝে বেরিয়ে গিয়েছেন হাসপাতাল থেকে, সেটাও অধ্যক্ষসুলভ আচরণ নয়।
অভিযোগ রয়েছে, যে পড়ুয়ারা আর জি করে অনশন করছেন, তাঁদের বাড়িতে পুলিশ মারফৎ ফোন করা হয়েছে। আর জি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে ১৯ জন পড়ুয়ার বাড়িতে ফোন করার জন্য টালা থানার তরফে লালবাজার কন্ট্রোল রুমে পাঠানো চিঠির প্রতিলিপিও ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। আর এই ঘটনার পর থেকেই অধ্যক্ষের সঙ্গে আজ আন্দোলনরত পড়ুয়াদের কথা কাটাকাটি বেঁধে যায়।
কিন্তু কেন অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাইছেন পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেন যা অগণতান্ত্রিক। যেখানে অধ্যক্ষের স্বৈরাচারী মনোভাব স্পষ্ট হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, “গত ৯ অগস্ট আমরা মিটিংয়ে বসতে চেয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে যাই। স্যার আমাদের সঙ্গে মিটিং না করায় আমরা অবস্থানে বসতে বাধ্য হই। ১০ অগস্ট আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়, দাবিদাওয়া নিয়ে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হবে। যদিও কোনও অজ্ঞাত কারণে তা হয়নি। আমরা এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে বলা হয় যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না এলে কলেজ কাউন্সিলের মিটিং করা যাবে না।”
একই সঙ্গে পড়ুয়াদের অভিযোগ, গত ২ অগস্ট কর্তৃপক্ষের তরফে ‘হোস্টেল কমিটি’ তৈরি হয় আরজি করে। কিন্তু সেই কমিটিটি পড়ুয়াদের অন্ধকারে রেখে তৈরি হয় বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। সেই কমিটির ভবিষ্যৎ কার্যাবলী ও কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে বলে দাবি পড়ুয়াদের। একই সঙ্গে তাঁরা বলেন, হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনেশনের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজ অধ্যক্ষের জন্য বন্ধ রয়েছে। যা ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে ক্ষতিকারক।
আরও পড়ুন : Durga Puja 2021: ‘মরিবার তরে’ কি ‘পাখা’ গজিয়েছে? পুজোর ভিড় দেখে চিকিৎসকেরা বলছেন ‘আত্মঘাতী বাঙালি’